আবু মোহাম্মদ আল বাঙালিকে বাংলায় নতুন আমির হিসেবে ঘোষণা করে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একটি শাখা সংগঠন ভারত ও বাংলাদেশে হামলা চালানোর সরাসরি হুমকি দিয়েছে। এটির নাম আল মুরসালাত।
বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে প্রচারিত আইএসের পোস্টারে বলা হয়, যদি মনে করে থাকেন যে আপনারা বাংলা ও হিন্দে খিলাফতের সৈনিকদের নীরব করে দিতে পেরেছেন ও এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে থাকেন তাহলে শুনে রাখুন, আমাদের কখনো নীরব করা যাবে না। প্রতিশোধের তৃষ্ণা কখনো মরে না।
ইসলামিক স্টেট ঢাকায় একটি সিনেমা হলের কাছে একটি ছোট বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর মাত্র একদিন পর এ হুমকি দেয়া হল। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুলিস্তান সিনেমা হলের কাছে এ ছোট বিস্ফোরণ ঘটে। বোমাটি পাতার সমস্যার কারণে কোনো প্রাণহানি ঘটার খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ বোমা বিস্ফোরণে কয়েকজন পুলিশ আহত হন।
আইএস মঙ্গলবার সকালের দিকে তাদের মুখপত্র আমাক-এর মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রচার করে। পরবর্তীতে তারা তাদের নেতা বাগদাদির বক্তব্যের সাথে ঢাকায় হামলার ব্যাপারে বাংলায় অনুবাদ করা বিবৃতি নপ্রকাশ করে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের ঘটনাবলীর উপর তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে। তাদের সন্দেহ যে এ বোমা হামলার ঘটনা একটি ধোঁয়াশা হতে পারে। বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গে হয়ত আসল হামলা আসছে।
হামলা ঘটনার কথা দ্রুত প্রকাশ এবং আইএস-সম্পর্কিত বিষয় বাংলা ভাষায় প্রকাশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে বিপদ ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আইএসপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো ‘শীঘ্রই আসছি’ লেখা একটি বাংলা পোস্টার প্রকাশ করে। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রথম সে খবর দেয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রধান আসাদুজ্জামান মিয়া মঙ্গলবার সংবাদপত্রকে বলেন যে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ও ডিএমপির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটগুলো এ ঘটনা তদন্ত করছে। সোমবার গুলিস্তানে যে ইমপ্রোভাইজড বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে তা সাধারণ পটকা বোমার চেয়ে আলাদা।
টেলিগ্রামে প্রচারিত ‘শীঘ্রই আসছি ইনশাল্লাহ’ লেখা পোস্টারের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্ত শুরু করেছে। পোস্টারে আল মুরসালাত নামের একটি গ্রুপের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এই একই গ্রুপ মঙ্গলবারের হুমকি দেয়।
একজন কর্মকর্তা বলেন, এরা মারাত্মক। আইএস তওহিদ জামাত নামে স্থানীয় একটি সংগঠনের মাধ্যমে কলম্বোতে উপর্যুপরি বোমা হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন (নতুন-জেএমবি)-এর একটি অংশের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতি রয়েছে। তারা আইসিস-এর কেন্দ্রীয় অঙ্গসংগঠন।
আরেকজন সন্ত্রাস দমন কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু জেএমবি অপারেটিভরা কোলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য স্থান এবং প্রতিবেশি রাজ্যগুলোতে সদস্য সংগ্রহ ও গোপন আস্তানা প্রতিষ্ঠার কাজের জন্য পরিচিত সে কারণে পশ্চিমবঙ্গে হামলার হুমকি উপেক্ষা করা যায় না।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।