আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে, এই সময়টা ক্রিটিক্যাল।
তিনি বলেন, উচ্চগতির বাতাস ও দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে সারা রাত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে।
‘সেসময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার থাকতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী উপকূল অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।’
উপকূলীয় জেলাগুলোতে শুকনা খাবার, ওষুধ, পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব জেলা আক্রান্ত হতে পারে সেসব জেলায় নতুন করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় জেলাগুলোতে মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকদের দু শ’ টন চাল পৌঁছে দেয়া হয়েছে, পাশাপাশি প্রত্যেক ডিসিকে ৫ লাখ করে টাকা দেয়া আছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি শুক্রবার রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ফণী আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকাল নাগাদ ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে এবং পরবর্তীতে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো সাত বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলায় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। যুগান্তর
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।