সৈয়দ কামাল,ফেনী থেকেঃফেনীর বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি একরাম হত্যার ৫ বছর পূর্ণ হল আজ।২০১৪ সালের ২০ মে সকালে ফেনী শহরের মাষ্ঠারপাড়াস্থ পৈত্রিক বাড়ী থেকে বেরহয়ে নিজ কার্যালয় ফুলগাজী উপজেলা পরিষদে যাওয়ার সময় সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯ টা পৌনে ১০ টার দিকে,ফেনী শহরের একাডেমী সড়কে নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হন উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম।খুনিরা রাস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার পেলে একরামকে বহনকরা তার ব্যাক্তিগত গাড়ীটির গতিরোধ করে এবং গাড়ীর বিতর থাকা একরামকে এলোপাতাড়ি কোপাতেথাকে,এই সময় একরাম গাড়ীর দরজাখুলে পালানোর চেষ্ঠা করলে,খুনিরা তাকে চারিদিক থেকে ঘিরেরেখে ছোট ছোট সাকুদ্বারা একরামের সমস্থ শরীর ক্ষতবিক্ষত করে পেলেন।একপর্যায় একরাম দিশেহারা হয়ে পুণঃরায় গাড়ীতে উঠেগেলে খুনিদের এক সদস্য গাড়ীর ড্রাইভার সিটের দিগথেকে রিভালবার দিয়ে একরামের মাথায় দুই রাউন্ড গুলি চালালে তখন একরাম গাড়ীর বিতর লুটিয়ে পড়েন।তখনো একরাম বেঁচেছিল,একরামের মৃত্যু নিশ্চিত করতে সর্বশেষ খুনিরা একরামকে জীবন্ত অবস্থায় গাড়ীতে রেখে গাড়ীটিতে আগুন দিয়ে,গাড়ীসহ একরামকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারেন।
আলোচিত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার বড়ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে দায়ের করা হত্যামামলাটি দীর্ঘ ৪ বছর আদালতে বিচারাধীন থাকার পর,১৩ মার্চ ২০১৮ সালে মামলার রায়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ৩৯ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার প্রধান আসামি স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহমদ চৌধুরী মিনারসহ ১৬ জন খালাস পেয়েছেন। ১৩ মার্চ বিকালে ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক এ রায় ঘোষণা করে।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল অফছার (জাহিদ হোসেন চৌধুরী) জিহাদ, ফেনী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেনী পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, আবিদুল ইসলাম আবিদ, এমরান হোসেন রাসেল প্রকাশ ইঞ্জিনিয়ার রাসেল, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, আজমীর হোসেন রায়হান, মো. শাহজালাল উদ্দিন শিপন, কাজী শাহনান মাহমুদ শানন, নুর উদ্দিন মিয়া, আবদুল কাইয়ুম, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী সিফাত, জাহিদুল হাসেম সৈকত, আবু বক্কর ছিদ্দিক (বক্কর), আলমগীর (আলাউদ্দিন) আরমান হোসেন কাউছার, চৌধুরী মোহাম্মদ নাফিজ উদ্দিন অনিক,ফেরদৌস মাহমুদ খাঁন হীরা,সজিব,পাংকু আরিফ (হুমায়ুন),ইসমাইল হোসেন,জসিম উদ্দিন নয়ন, মামুন, মো. সোহান চৌধুরী, মানিক, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, টিটু-১, নিজাম উদ্দিন আবু, রাহাত মো. এরফান (আমজাদ) টিটু-২, আরিফ (নাতি আরিফ), রাশেদুল ইসলাম রাজু-আটা রাজু-বাটা রাজু, রুবেল, বাবলু,শফিকুর রহমান ময়না, একরাম হোসেন (আকরাম),মহিউদ্দিন আনিস,মোসলেহ উদ্দিন আসিফ।
খালাস পেয়েছেন জেলা তাঁতি দলের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার, ফেনী পৌর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক জিয়াউল আলম মিষ্টার, আলমগীর (আলাউদ্দিন), সাইদুল করিম পাবন (পাপন), জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া, মো. বেলায়েত হোসেন (টুপি বেলা), মো. মাসুদ, আবদুর রহমান রউপ, ইকবাল, মো. শাখাওয়াত, শরিফুল জামিন (পিয়াস), কাদের, কালা (কালা মিয়া), মো. ইউনুছ ভূঁইয়া, শামীম (টপ শামীম), রিপন,ফারুক। এ মামলার অপর আসামি মো. সোহেল (রুটি সোহেল) র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
আলোচিত এ মামলায় জানিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন- এমরান হোসেন রাসেল (ইঞ্জিনিয়ার রাসেল), জাহিদুল হাসেম সৈকত, চৌধুরী মো. নাফিস উদ্দিন (অনিক), মো. ইউনুছ ভূঁইয়া শামীম (টপ শামীম), আবিদুল ইসলাম আবিদ, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, নুরুল অফছার (জাহিদ হোসেন চৌধুরী) জিহাদ, অরমান হোসেন কাউসার, জসিম উদ্দিন নয়ন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে চার্জশিট ভুক্ত ১০ আসামি এবং জামিনে মুক্তি পেয়ে আট আসামি পলাতক রয়েছেন।