৩ আগস্ট ২০১৯,বিন্দুবাংলা টিভি. কম,
নিউজ ডেস্ক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ঢাকার দুই সিটির মেয়রসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিদিন সভা-সেমিনারে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে বলছেন, শিগগির ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু তাদের সেই আশ্বাসের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এরই মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। রাজধানীর ৪৯টি সরকারি-বেসরকারি ও ঢাকার বাইরে শুধু সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তথ্য পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আক্রান্তের এই সংখ্যা নিরূপণ করছে। এর বাইরে কয়েক হাজার বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে যেসব মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে, তারা হিসাবের আওতায় আসছে না। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সরকারি হিসাবে এক-দশমাংশ চিত্র পাওয়া যাচ্ছে মাত্র। ৯০ শতাংশ রোগী হিসাবেই আসছে না। শুক্রবারও সারাদেশে ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মৃত্যের সংখ্যা ৬১ জনে দাঁড়াল। সমকাল
বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মালিহা মাহফুজা অনন্যা নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ও টেকনোলজি বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে মেঘনা নিট কম্পোজিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনার হিসেবে চাকরি করতেন। অনন্যা উত্তরায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। গত ২১ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর দিন তাকে উত্তরার লুভানা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে আনোয়ার হোসেন ও মিনার নামে দুথজনের মৃত্যু হয়েছে। নোয়াখালীতে মোশাররফ হোসেন ও আবদুল মোতালেব নামে দুথজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত সারাদেশে ২১ হাজার ২৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৫। এ ছাড়া সারাদেশে আরও ৪ হাজার ১৯০ জন আক্রান্ত হয়েছে। শুক্রবার নতুন করে এক হাজার ৬৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগ : ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলায় ২৮২ জন, গাজীপুরে ১৬০, গোপালগঞ্জে ৩১ জন, মাদারীপুরে ৫০ জন, মানিকগঞ্জে ৮৭ জন, নরসিংদীতে ৫৫ জন, রাজবাড়ী ৫৬ জন, শরীয়তপুরে ২৯ জন, টাঙ্গাইলে ৯০ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩৭ জন, কিশোরগঞ্জে ১৬২ জন, নারায়ণগঞ্জে ৫৮ জন এবং ফরিদপুরে ১১ জনসহ মোট ১ হাজার ১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ : চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ২৮৯ জন, ফেনীতে ১২২ জন, কুমিল্লায় ৮৬ জন, চাঁদপুর ১৪৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪১ জন, লক্ষ্মীপুরে ৫২ জন, নোয়াখালীতে ৭২ জন, কক্সবাজারে ৩০ জন, খাগড়াছড়িতে ১৭ জন, রাঙামাটিতে ৬ জন এবং বান্দরবানে একজনসহ মোট ৮৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছে।
খুলনা বিভাগ : খুলনা জেলায় ২৩০ জন, কুষ্টিয়ায় ৯৭ জন, মাগুরায় ২০ জন, নড়াইলে ১৮ জন, যশোরে ১৩৪ জন, ঝিনাইদহে ৪৩ জন, বাগেরহাটে ১০ জন, সাতক্ষীরায় ৩১ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৭ জন ও মেহেরপুরে ৬ জনসহ মোট ৬০৬ জন আক্রান্ত হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগ : রাজশাহী জেলায় ১১১ জন, বগুড়ায় ১৭৭ জন, পাবনায় ৫৫ জন, সিরাজগঞ্জে ৮১ জন, নওগাঁয় ১৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ জন, নাটোরে ৮ জন ও জয়পুরহাটে ৪ জনসহ মোট ৪৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
রংপুর বিভাগ : রংপুর জেলায় ১২৩ জন, লালমনিরহাটে ৬ জন, কুড়িগ্রামে ১৭ জন, গাইবান্ধায় ১১ জন, নীলফামারীতে ১৬ জন, দিনাজপুরে ৪৭ জন, পঞ্চগড়ে ৩ জন ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১৮ জনসহ মোট ২৪১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বরিশাল বিভাগ : বরিশাল জেলায় ২০১ জন, পটুয়াখালীতে ৩৭ জন, ভোলায় ২১ জন, পিরোজপুরে ১৬ জন, ঝালকাঠিতে ৮ জন, বরগুনায় ৩৫ জনসহ মোট ৩১৮ জন আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট বিভাগ : সিলেট জেলায় ১২৫ জন, সুনামগঞ্জে ৯ জন, হবিগঞ্জে ১৫ জন, মৌলভীবাজারে ২৮ জনসহ মোট ১৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগ : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ৩০২ জন, জামালপুরে ৬১ জন, শেরপুরে ২৫ জন, নেত্রকোনায় ১৩ জনসহ মোট ৪০১ আক্রান্ত হয়েছে।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।