১১ নভেম্বর ২০১৯, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্ট :
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিক, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ও জাতীয় সংসদের প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯২তম জন্মদিন আজ। ১৯২৮ সালের ১১ নভেম্বর সিলেট শহরের দরগা গেইটস্থ রশিদ মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা প্রধান হলে বিকেল ৩টায় ‘স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদথ এর পক্ষ থেকে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিুবর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখবেন, শেখ হাসিনা বার্ণ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. সামন্ত লাল সেন, প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বোন জেবা রশীদ চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী, সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।
মরহুম স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একাধারে কুটনীতিক, আমলা ও রাজনীতিক। তিনি ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। কূটনীতিক হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দায়িত্বপালনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১-৭২ সালে দিল্লীতে বাংলাদেশ মিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অসীম সাহসিকতা দেখিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠন এবং স্বীকৃতি আদায়ে ৪০টির বেশি দেশের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে অন্তত ৩৪টি দেশের স্বীকৃতি আদায়ে সক্ষম হয়েছিলেন। বাংলাদেশি হিসেবে একমাত্র তিনিই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার গৌরব অর্জন করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘কলেজ অব উইলিয়াম এন্ড মেরিথ থেকে ১৯৮৪ সালে ‘মাহাত্মা গান্ধী শান্তি পুরস্কারথ লাভ করেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর ‘স্বাধীনতা পুরস্কারথ প্রদান করে।
তিনি ১৯৭২ সালে জার্মানীতে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এছাড়া সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং ভ্যাটিকানেও একই পদে অধিষ্টিত ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থা (ওঅঊঅ) এবং জাতিসংঘের (টঘওউঙ) শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন সংস্থার প্রথম স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন।
সিলেটের উন্নয়নে তিনি ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ। জীবদ্দশায় তিনি সিলেটের রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং দৃষ্টিনন্দন সিলেট রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণে তার অবদানের কথা সিলেটবাসী এখনও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
৭৫ এর ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সময় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আশ্রয়হীন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ বাসায় আশ্রয় দিয়েছিলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের স্পিকার মনোনীত হন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এবং ২০০১ সালের ১০ জুলাই স্পিকার থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করেন। হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার প্রাঙ্গণে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
পূর্বপশ্চিমবিডি
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।