০১ জুলাই ২০২১, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন মেডিকেল কলেজ প্রকল্প সংক্রান্ত আইএমইডি’র তদন্ত রিপোর্টের সূত্র ধরে করা নিউজে সংক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতার দায়ের করা তথ্য প্রযুক্তি নিরাপত্তা আইনের মামলায় দুই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ‘ভয়েজ অব কুষ্টিয়া’ নামের স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রকাশক ও সম্পাদক মুন্সী শাহীন আহমেদ জুয়েল (৪২) এবং বার্তা সম্পাদক অঞ্জন কুমার শীল শুভ (২৮)।
বুধবার ভোরে তাদের নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। পরে বিকেলে তাদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের প্রযুক্তি নিরাপত্তা আইনে মামলা রেকর্ড করে সন্ধ্যায় আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
বুধবার বিকেল ৫টায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মামলার বাদী মিজানুর রহমান মিজুর দেয়া এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুন ‘ভয়েস অফ কুষ্টিয়া’ নামে সরকারের অনুমোদনহীন একটি নিউজ পোর্টাল সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে রডের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে।
উক্ত মিথ্যা খবরের শেষাংশে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে একটি ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহারের কথাও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে এতে ১ শ্রমিক নিহত ও ১০ শ্রমিক আহত হন। মেডিকেল কলেজের নির্মান শেষ হওয়া কোন অংশ ধসে পড়েনি। নির্মাণ কাজ চলাবস্থায় দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে’।
এজাহারে এমনটি দাবি করে মিথ্যা বানোয়াট ও হীন উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ এনেছে এজাহারকারী। মামলাটিতে দুইজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
শাহীন আহমেদ জুয়েলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারের জানান, বুধবার ভোরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাদের থানাপাড়াস্থ বাসা থেকে জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশ আমাকে জানান- জুয়েলের সাথে আমরা একটু কথা বলতে চাই। কিছু তথ্য জানা দরকার সেজন্য নিয়ে যাচ্ছি। বিকেলে শুনি জুয়েলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কুষ্টিয়া মেডিকেলের অনিয়মের বিষয়ে কুষ্টিয়াবাসী জানে, আপনারাও জানেন, তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তেও প্রমাণ পাইছে অনিয়মের কথা, সরকারের তদন্ত রিপোর্ট ধরেই ভয়েস অব কুষ্টিয়া অনলাইন পত্রিকায় নিউজ হইছে। এটা হয়রানি করার জন্যি মামলা করেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি পুলিশ পরিদর্শক সাব্বিরুল আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্বের কোনো সংবাদ প্রকাশের সাথে এই মামলার সম্পর্ক নেই। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে রডের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে বলে একটি সংবাদ প্রকাশ করে তারা ফেসবুকে ভাইরাল করেছে।
এ ঘটনায় দুইজনের নামে তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা আইনে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে।
আসামিদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।