ডেস্ক রিপোর্ট।।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বিয়ের প্রলোভনে এক কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগে মেহেদী হাসান নামে এক যুবকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে শ্রীপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। মামলার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরই অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে।
মামলার আসামিরা হলেন অভিযুক্ত প্রেমিক মেহেদী হাসান (২১), মেহেদীর বড় ভাই জয় (২৩), বাবা ইউসুফ আলী (৫৫), চাচা জুয়েল রানা (৩৮), বন্ধু সবুজ মিয়া (৩০), ফুলবানু (৩০) ও রানা (১৮)। অভিযুক্তরা সবাই পৌরসভার কেওয়া দক্ষিণখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী কিশোরীর (১৬) বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। সে মায়ের সঙ্গে শ্রীপুরে থাকে। তার মা একজন পোশাকশ্রমিক।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, দুই বছর আগে মেহেদী হাসানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পর্যায়ক্রমে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন রিসোর্টসহ বসতবাড়িতে অভিযুক্তের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এর পর থেকে অভিযুক্ত মেহেদী হাসানকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু মেহেদী টালবাহানা শুরু করেন।
সে আরও জানায়, অভিযুক্ত প্রেমিক গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে জানান পাশের মাস্টার বাড়ি বাজারের রসের মিষ্টির দোকানে যেতে। একান্ত কথা রয়েছে। মেহেদীর কথা মতো সে সেখানে গেলে আসামিরা জোরপূর্বক একটি গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। গাড়িতে করে নেওয়া হয় ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহ শহরের কয়েকটি হাসপাতালে তাকে অজ্ঞান করে গর্ভপাত করানো হয়।
সে বলে, জ্ঞান ফিরে দেখতে পান একটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। পেট ব্যান্ডেজ মোড়ানো, প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযুক্ত মেহেদীর বন্ধু রানা তাকে বাসার কাছে পৌঁছে দিয়ে যান।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, ‘মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানার পরপরই অভিযুক্ত মেহেদী হাসানের মা, বাবা ও ভাইকে অবহিত করি। বিষয়টির সমাধান দাবি করি। কিন্তু মেহেদীর প্রভাবশালী বাবা বিষয়টি মেনে নেয়নি। পরে মেহেদী স্বজনদের পরামর্শে সুকৌশলে মেয়েকে নিয়ে যায়। কর্মস্থল থেকে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান করতে থাকি। মেয়ের মোবাইল ফোনটি ওরা বন্ধ করে রাখে। দুই দিন মেয়ের কোনো খোঁজখবর পাইনি। শনিবার রাতে মেহেদীর বন্ধু অসুস্থ মেয়েকে বাসার কাছে রেখে যায়। তখন বিস্তারিত জানতে পারি। সবকিছু যেনে আজ দুপুরে থানায় মামলা দায়ের করছি।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মেহেদী হাসানের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, থানায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশ।