নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গ্রেপ্তার ও মামলা-বাণিজ্য থেকে নিরপরাধ মানুষকে মুক্ত রাখতে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধিতে পরিবর্তন এনেছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময় কিছু জিনিস নিয়ে আমরা নিজেরাই বিব্রত। একটা হচ্ছে ভুয়া বা মিথ্যা মামলা করা, আরেকটা হচ্ছে মামলার ঘটনা সত্যি, কিন্তু সেখানে অনেক লোককে আসামি করে মামলা-বাণিজ্য করা। সে জন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিআরপিসিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছি।’
আজ রোববার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই পরিবর্তন চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আসিফ নজরুল বলেন, পুলিশ কমিশনার, এসপি বা এসপি পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তা যদি মনে করেন, তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় কোনো মামলার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে একটা প্রাইমারি তদন্ত প্রতিবেদন নিতে পারেন। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা প্রাথমিক রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেবেন। বিচারক যদি মনে করেন, কোনো মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁদের কিছুসংখ্যকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ নেই, সাক্ষ্য নেই; তাহলে প্রি–ট্রায়াল স্টেজে আসামির তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দিতে পারবেন।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, মামলায় গ্রেপ্তার-বাণিজ্য হচ্ছে, মামলা-বাণিজ্য হচ্ছে, সেসবের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন ও আদালত যাঁদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে কোনো রকম প্রমাণ পাবে না, তাঁদের বিচার শুরুর আগেই মামলার তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবে। পরে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার সময় পুলিশ যদি দেখে যে যাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের কারও কারও ক্ষেত্রে ঘটনায় যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তাহলে তাঁদের আসামি তালিকায় অন্তর্ভুুক্ত করতে পারবে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে অনেক নিরপরাধ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তখন মামলা-বাণিজ্য থেকে অনেকে রেহাই পাবেন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, মামলার তদন্ত থেমে থাকবে। তদন্ত চলতে থাকবে। আবার পুলিশ যদি পরে দেখে, আগে যাঁদের মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পরে প্রকৃত প্রমাণ পাওয়া গেছে, তখন তাঁদের নাম আবারও যুক্ত করতে পারবে।