সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সংঘটিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শাহাদাতবরণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ জন শান্তিরক্ষীর নামাজে জানাজা আজ ঢাকা সেনানিবাসস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে তাঁদের প্রতি যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে সংঘটিত ওই বর্বরোচিত হামলায় শহীদ শান্তিরক্ষীদের স্মরণে আয়োজিত জানাজায় উপস্থিত ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। এ সময় সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার পূর্বে শহীদদের জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করা হয় এবং তাঁদের স্বজনরা আবেগঘন বক্তব্য রাখেন। পরে জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে ইউনিসফা’র চিফ কমিউনিটি লিয়াজোঁ অফিসার মিস্টার বরিস-এফ্রেম চৌমাভি বক্তব্য প্রদান করেন। জানাজা শেষে শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয় এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সামরিক সচিবসহ বাহিনীর প্রধানরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে শহীদদের পরিবারবর্গের কাছে জাতিসংঘের পতাকা হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে শহীদদের মরদেহ নিজ নিজ জেলা—নাটোর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রাজবাড়ী ও কিশোরগঞ্জে হেলিকপ্টারযোগে (আবহাওয়া প্রতিকূল হলে সড়কপথে) পাঠানো হবে এবং যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করা হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ সদর দপ্তর শহীদদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রেখেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, শহীদ শান্তিরক্ষীদের মরদেহ গতকাল এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঢাকায় পৌঁছায়। এ হামলায় আরও ৯ জন শান্তিরক্ষী আহত হন, যাদের মধ্যে ৮ জন কেনিয়ার নাইরোবিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা সবাই শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।