November 24, 2024, 4:27 am

সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ

১৮ মার্চ ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, এম এইচ বিপ্লব সিকদার :

অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ভয়ানকভাবে বেড়ে চলেছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে। সাংবাদিক নির্যাতনের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আমরা সাংবাদিক সমাজ তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ না হলে সাংবাদিকরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
আজ বুধবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন -ডিইউজের উদ্যোগে মানব জমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা , সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের নিঃশর্ত মুক্তি, বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের সন্ধান দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশ নেতৃবৃন্দ এসব বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আব্দুস শহিদ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজে সহ-সভাপতি নূরুল আমিন রোকন ও মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালীন নোমানী, ডিআরইউ’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ডিইউজে’র প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর। এছাড়া সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ফটো জার্ণালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসীন, ডিইউজের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজের নবনির্বাচিত নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই, আব্দুল হালিম প্রমুখ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিকরা বর্তমানে কালো সময় পার করছে। রাতের আধারে সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে কারাগারে বন্দি করে অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে, আমি নিজে মিথ্যা মামলার আসামি, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদসহ অনেক সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বানোয়াট মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে বানোয়াট মামলায় সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে আমার দেশ পত্রিকা, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ানসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। এর ফলে হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে। এ সরকার গণমাধ্যম বিরোধী। এই সরকারের বিদায় ছাড়া স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব নয়। এসময় তিনি অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান।
শওকত মাহমুদ, বর্তমানে নির্মমভাবে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফকে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। যা বর্বর ও নিষ্ঠুর আচরণের বহিঃপ্রকাশ। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। ফটোসাংবাদিক সফিকুল ইসলাম কাজল আজ নিখোঁজ। এভাবে দেশ চলতে পারে না। ভোট চুরি করে যারা সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে তারাই আজ অন্যায় ও অপকর্ম কাজ করে যাচ্ছে। এজন্যই সরকার নিশ্চুপ। যতদিন সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হবে ততদিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে ও সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে আমরা দিনের পর দিন আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এরপরও গত এক বছরে অসংখ্য সাংবাদিককে নির্যাতন করা হয়েছে। অনেক বর্ষিয়ান সাংবাদিক নেতাকে মথ্যিা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বন্ধ মিডিয়াগুলো খুলে না দেয়ায় আজ অনেক সাংবাদিক বেকারত্ব বহন করে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা নিরব থাকতে পারি না। অধিকার আদায় করতে রাজপথে নেমে র্দুবার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্র মুক্ত হবে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা যাবে। সুতরাং আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। বিশ্বে এমন নির্যাতন আর কোনো দেশে করা হয় না। একের পর এক সাংবাদিকরে উপর এমন নির্যাতন সাংবাদিক সমাজ মেনে নিতে পারে না। আমি অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। বন্ধ সকল মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। তানাহলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে আজ কথা বলার অধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই। প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের উপর চালানো হচ্ছে কঠোর নির্যাতন। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে অসংখ্য গণমাধ্যম। এভাবে দেশ চলতে পারে না। সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এসময় তিনি বন্ধ সকল মিডিয়া খুলে দেয়ারও দাবি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা