নাঈম হাসান, মেঘনা থেকে ফিরে :
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা—দেখতে শান্ত, নিরিবিলি, সম্ভাবনাময় এক জনপদ। অথচ সম্প্রতি এখানকার আকাশ যেন ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেছে। মাদকের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, ভয়, আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং নানা রকম ‘শেল্টার’ ও ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে উঠছে একের পর এক মাদক সাম্রাজ্য। তারই এক ভয়ংকর রূপ হলো—নব্য মাদক সম্রাট, যার নাম স্থানীয়ভাবে উচ্চারিত হয় সশব্দে, কিন্তু প্রশাসনের কানে যেন পৌঁছায় না।
চেহারার আড়ালে ভয়াবহ মুখোশ
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এই মাদক কারবারিরা আর আগের মতো খোলা হাতে কাজ করে না। এখন তারা আরও পরিকল্পিত, ধুরন্ধর এবং রাজনৈতিক কিংবা প্রভাবশালী মুখোশ পরে থেকে কাজ চালায়। কিছু জনপ্রতিনিধি, কিছু সামাজিক নেতা এমনকি কিছু প্রভাবশালী পরিবারও এই নব্য মাদক সম্রাটদের ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফলে প্রশাসনের কেউ কেউ চুপ থাকে, কেউ কেউ বাধ্য হয় চোখ বন্ধ রাখতে।
‘শেল্টার’ শব্দের মানে এখন মাফিয়ার ঘাঁটি
মেঘনায় এখন ‘শেল্টার’ মানে নিরাপদ আশ্রয় নয়, বরং অপরাধীদের কৌশলী দুর্গ। কথিত অধিপতি, কিছু কথিত সমাজপতি, ব্যবসায়ী, এমনকি ভদ্রলোক পরিচিত কিছু ব্যক্তি এই শেল্টারের বড় পৃষ্ঠপোষক। ভাড়া বাড়ি, অস্থায়ী দোকান, এমনকি চায়ের আড্ডার আড়ালেও চলে ভয়ঙ্কর মাদক লেনদেন। ব্যবহার হচ্ছে যুব সমাজ, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া তরুণ, নারী—কেউই বাদ যাচ্ছে না।
প্রশাসনের নীরবতা—না বুঝে না বুঝার ভান?
একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে—পুলিশ, ,নতুন, পুরাতন নেতা, এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এসব তথ্য জানেন, তবু নীরব। কারণ? হয়তো ভয়, হয়তো স্বার্থ, কিংবা ‘উপরে নির্দেশ নেই’—এই অজুহাতে দোষীদের ধরা হয় না, অথবা ধরা হলেও ‘শেল্টার’ থেকে মুক্তি পেয়ে যায়।
কিছু প্রশ্ন, যেগুলো উত্তর চায়:
কে এই নব্য মাদক সম্রাট?
কার ছত্রচ্ছায়ায় এত শক্তি পেলো সে?
কে এই মুখোশধারী শেল্টারদাতারা?
প্রশাসন কী করছে, কেন করছে না?
সমাধান কী?
স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
জনগণকে সাহস দিতে হবে সত্য প্রকাশে।
স্থানীয় সাংবাদিক, শিক্ষক, মসজিদের ইমামদের নিয়ে গঠন করতে হবে সচেতনতা ফোরাম।
মুখোশ খুলে প্রকৃত অপরাধীদের নাম প্রকাশ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মেঘনা বাঁচাতে হলে এখনই সময়। নতুবা আগামী প্রজন্মের সামনে এক অন্ধকার সমাজ রেখে যেতে হবে, যেখানে মাদকই হবে জীবনের নিয়ম আর ভয়ই হবে ভাষা।
আপনি যদি মেঘনার, দেশের একজন সচেতন নাগরিক হন—তাহলে এখনই বলুন, লিখুন, আওয়াজ তুলুন। মুখোশ টেনে ছিঁড়ে ফেলুন—নব্য মাদক সম্রাট ও শেল্টারদাতাদের বিরুদ্ধে।
ধারাবাহিক পর্ব -১