August 10, 2025, 6:34 am

মেঘনায় সামাজিক অবক্ষয়ের বলি সম্ভাবনাময় হাউজিং খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে, মেঘনা ও কাঠালিয়া নদীবেষ্টিত কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা যেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে সংযোগ সড়ক এবং কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চল-২ ইতোমধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেছে। এর পাশাপাশি তিতাস ইকোনমিক জোন ও ঢাকা গ্রুপ ইকোনমিক জোনের জন্যও জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।

উপজেলাটিতে রয়েছে শ্যামলীমা হাউজিং প্রকল্প—যা দেশের খ্যাতিমান আমলাদের বিনিয়োগে গড়ে উঠেছে। আছে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রিসোর্ট, রয়েছে গোবিন্দপুর জমিদার বাড়ি (ব্যক্তিমালিকানাধীন) সহ পর্যটন সম্ভাবনাময় স্থানও। সব মিলিয়ে মেঘনা একসময় হাউজিং ও আবাসন খাতের জন্য ছিল এক ‘অপার সম্ভাবনার ঠিকানা’।

কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র দেখাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক বিপর্যয়, শাসনের চেয়ে শোষণের সংস্কৃতি, দেশীয় অস্ত্রের ঝনঝনানি, মাদকের ভয়াল বিস্তার, এবং মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে দুর্নীতি ও অনিয়ম—সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে মেঘনা এখন ঝুঁকিপূর্ণ। সন্ধ্যার পর উপজেলা সদরে শোনা যায় শিয়ালের ডাক, আর অলিগলিতে বসে অপরাধীদের আড্ডা। সরকারের তালিকায় এই উপজেলা এখন “দুর্গম” এলাকায় অন্তর্ভুক্ত।

স্থানীয় জমি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জমি বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু বাইরের ক্রেতা নেই। একসময় বাইরের বিনিয়োগকারীরা ভিড় করলেও এখন সেই চিত্র উধাও। স্থানীয় ক্রেতারা যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ভবিষ্যৎ বসবাস কিংবা মুনাফার আশায় জমি কিনছেন।

মাত্র ৫০ মিনিটের গণপরিবহন ভ্রমণে ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব,এমন একটি উপজেলার উন্নয়ন ব্যক্তিগত উদ্যোগেই সম্ভব ছিল। কিন্তু সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ না থাকলে, সম্ভাবনার গল্প খুব দ্রুতই বিষাদের গল্পে পরিণত হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।


ফেসবুকে আমরা