“আসুন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই”— এ স্লোগানকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো দুদকের ১৯২তম গণশুনানি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জনসচেতনতা ও দায়বদ্ধতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, জনগণের ‘না’ বলার মানসিকতা বাস্তবে কার্যকর করতে না পারলেই দুর্নীতি বাড়ে।
চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন—
“আজ এখানে যদি দুর্নীতি চায় কি না—এমন গণভোট করি, শতভাগ মানুষ ভোট দেবে ‘চাই না’।
তাহলে এ জেলায় দুর্নীতি হয় কীভাবে?
আমাদের ‘চাই না’ আর ‘চাই’-এর মাঝে যে ফাঁক আছে, আজকের গণশুনানি সেই ফাঁক পূরণের জাগরণী অনুষ্ঠান।”
তিনি আরও বলেন, দুদকের গণশুনানি কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধের সরাসরি কর্মযজ্ঞ। যেখানে ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীরা অভিযোগ তুলে ধরেন আর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক জবাবদিহির মুখোমুখি হন।
গণশুনানিতে হবিগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানি ও বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধরেন সাধারণ মানুষ। দুদক মোট ৮১টি অভিযোগের শুনানি করে। এর মধ্যে ৩টি অভিযোগ অনুসন্ধানে গ্রহণ, ৬০টি নিষ্পত্তি, আর বাকি অভিযোগগুলো প্রতিবেদন দাখিলসাপেক্ষে নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, দুদক সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এবং পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান।
গণশুনানি উপলক্ষে সপ্তাহজুড়ে মাইকিং, লিফলেট-পোস্টার বিতরণ, অভিযোগ বাক্স স্থাপনসহ দুদকের ব্যাপক প্রচারণা ছিল উল্লেখযোগ্য। সরাসরি অংশ নেন সেবাদাতা কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা।
কর্মকর্তারা জানান, সরকারি সেবা নিশ্চিত করা এবং সেবাদাতাদের মধ্যে সততা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করাই গণশুনানির মূল লক্ষ্য।