কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সম্প্রীতি রক্ষা করা প্রতিটি রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের ওপর নির্ভর করছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো অপশক্তি যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।
মেঘনা উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক বহুমত ও সহনশীল সংস্কৃতির চর্চায় পরিচিত। এ অঞ্চলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের রেওয়াজ রয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উসকানি, পেশিশক্তি কিংবা বিদ্বেষমূলক তৎপরতায় যেন অন্যের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুভূতিতে আঘাত না লাগে—সে দায়িত্ব রাজনৈতিক দলসহ সকল অংশীজনের।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের ফরাজীকান্দি এলাকায় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে একটি বাউল গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে মতাদর্শগত ভিন্নতা থেকে একটি পক্ষ অনুষ্ঠান বন্ধের দাবিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাঙ্গা সৃষ্টির আশঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর মতে, যেহেতু প্রশাসন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে, সেহেতু কোনো অপশক্তি যেন এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি জরুরি। প্রয়োজনে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এলাকাটিকে সচেতন মহল অত্যন্ত স্পর্শকাতর হিসেবেই দেখছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে এবং এর প্রভাব যেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না পড়ে। এজন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সহনশীলতা বজায় রেখে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ওয়াজ মাহফিল, বাউলগানসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন হয়ে থাকে, যা এ অঞ্চলের সম্প্রীতির ঐতিহ্যের অংশ। এই বহুত্ববাদী সংস্কৃতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করতে প্রশাসনের প্রতি আগাম তদন্ত ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা—কোনো ষড়যন্ত্রকারী স্বরযন্ত্র যেন শান্ত মেঘনাকে অশান্ত করতে না পারে।