সৈয়দ কামাল,ফেনী থেকেঃপবিত্র রমজান মাস যাচ্ছে না,আমার কাছে যেন কেয়ামত যাচ্ছে।কারণ সেহেরি ও ইফতারের সময় আমার মেয়ে নুসরাত আমার সাথেই খেতে বসতো।গল্প করতো,পানি গরম করতো।আজকে আমার মেয়ে নেই।বাকী সবই আছে।রোজা ও আছে,কথাগুলো বলছিলেন ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মা শিরিন আক্তার।নুসরাতকে ছাড়া এবারের রমজান মাসটি কেমন কাটছে তার পরিবারটি;জানতে তার বাড়িতে গেলে নুসরাত জাহান রাফির মা তাকে নিয়ে অতিবাহীত করা গত রমজান মাসের স্মৃতি চারণ কালে,এইসব কথা বলেন।নিজের কলিজার টুকরা মেয়েকে ছাড়া এবারই প্রথম পবিত্র রমজান মাস পার করছেন তারা। নিহত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মা শিরিন আক্তার আরো বলেন,আমার মেয়ে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন।নুসরাত শহীদ হয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের মনে দাগ কেটেছে।সে কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছে।নুসরাতের বাবা,দাদা, চাচা ও ভাই সবাই আলেম।দুনিয়াতে কিছু না পেলেও আখেরাতে আমার মেয়ে শহীদি মর্যাদা পাবে। তিনি বলেন,আমরা ভাল আছি।আমরা জীবিত অবস্থায় নুসরাতের খুনিদের বিচার দেখে যেতে চাই।উল্লেখ্য নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থীনি ছিলেন।ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন নুসরাত।পরে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ এপ্রিল সোনাগাজী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে,পুলিশ অভিযোগটিকে এফআইআর হিসেবে গন্যকরে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করেন।ওই সময় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি তুলে নিতে,সোনাগাজী উপজেলার সরকার দলীয় প্রভাবশালী একটি মহল মামলাটি তুলে নিয়ে,অধ্যক্ষকে জেলথেকে বের করতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দমকি দিয়ে পরিবারটির উপর চাপ প্রয়োগ করছিল। এরপর ৬ এপ্রিল সকাল পৌনে ১০ টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে তার দুই সহপাটি পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বেথেকে অপেক্ষমান থাকা হত্যাকারীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়েদে।একপর্যায়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত।