১৬ জুলাই ২০১৯, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্ট :
দেশে ভয়াবহ ও ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে কি ভয়ংকর পরিস্থিতি হলে একজন বিচারক এজলাসে তার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কবোধ করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, দেশজুড়ে কেবল গুম, খুন, ধর্ষণ, হামলা-মামলা, নারী-শিশুদের পাশবিক নির্যাতন। প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, আগুনে পুড়িয়ে লোমহর্ষক কায়দায় হত্যাসহ দেশ ভরে উঠেছে অনাচার অবিচারের মহামারীতে। আর অবৈধ সরকার ব্যস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে।
তিনি বলেন, সোমবার কুমিল্লা আদালতে বিচারকের খাস কামরায় কি ভয়াবহ নজিরবিহীন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেটা আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, পুলিশ, আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীদের সামনে একজন আসামি আরেকজন আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই হত্যার শিকার আমিও হতাম কিংবা এটির শিকার আমার কোনও সহযোগী বা কোনও আইনজীবীও হতে পারতেন। আমাদের নিরাপত্তা কোথায় ?
রিজভী বলেন, সরকারের বিকট অমানবিকতা, নির্দয়-নিষ্ঠুরতার কোপানলে পড়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন কারাগারে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। দেশের মানুষের প্রিয় নেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
মিডনাইট সরকারের মিডনাইট তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সোমবার বলেছেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের নামে অতীতের মতো কোনো বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুর সহ্য করা হবে না। জনগণ ও রাষ্ট্রের যে কোনো ক্ষতিসাধনের বিরূদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই-আপনি যে বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন, সেটিই তো উস্কানিমূলক, একটা অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন।
দেশের শেয়ার বাজার আবারো দৈন্য-দশাগ্রস্ত দাবি করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা মানে শেয়ারবাজার কেলেংকারি, লুটপাটের মহোৎসব। আওয়ামী সরকার আর শেয়ার বাজার এক সাথে চলতে পারে না। ১৯৯৬ সালের পর ২০১০ সালে শেয়ারবাজার থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটের অনুন্নয়ন খাতের সমপরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার বাজার মূলধন লুট হয়। এ টাকা ইউরোপ, আমেরিকা, মালেশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের রথি-মহারথীরা এই লুটপাটের নায়ক। শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করে সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়ার সাত বছর পরও লুটেরা খলনায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। উল্টো শেয়ারবাজার লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সেই সময় শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের যে তালিকা করা হয়েছিল সেই তালিকার একজন ব্যবসায়ী এখন মন্ত্রী, আরেকজন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। শেয়ার কেলেংকারি মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান সারিতে রয়েছেন দেশের তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তারা শাস্তির বদলে আরো প্রতাপশালী হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, কবির মুরাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনীর হোসেন, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।