রোববার, ১৪ জুলাই ২০১৯, বিন্দুবাংলা টি.. কম,
জকিগঞ্জ প্রতিনিধি:: জকিগঞ্জের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। শনিবার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত নদীর পানি বিপদসীমার ১৪.৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আতংক উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
ইতিমধ্যে সুরমা নদীর ডাইক ভেঙ্গে বারহাল ইউনিয়নের নুরনগর এলাকায় ডাইক ভেঙ্গে ও নিজগ্রামে ডাইক উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। কুশিয়ারা নদীর বিরশ্রী ইউনিয়নের পীরনগর এলাকায় ডাইক ভেঙ্গে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। দুটি ইউনিয়নে কয়েক হাজার পানিবন্দি হয়ে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও জকিগঞ্জ ইউনিয়নের মানিকপুর, ছবড়িয়া, রারাই, মানিকপুর ইউনিয়নের রসুলপুরসহ বেশ কয়েকটি স্থানের ডাইক খুবই ঝূঁকিপূর্ণ। সকাল থেকে বালুভর্তি বস্তা ফেলে নদীর পানি প্রতিরোধের চেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এরপরও ডাইক উপচে বিভিন্ন স্থানে পানি ঢুকছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় এলাকাবাসী রাত জেগে ডাইক পাহারা দিচ্ছেন। নদীর পানি সময় সময় বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ডাইকে ফাঁটল দেখা দিচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এ খবর লেখা পর্যন্ত এলাকাবাসী, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় অতি ঝূঁকিপূর্ণ বেশ কয়েকটি ডাইকে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে বানের পানি রোধ করার চেষ্ঠা চলছে। নদীর পানি বৃদ্ধির পাওয়ার কারণে নতুন নতুন স্থানের ডাইকে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বড় বন্যা দেখা দিবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন লোকজন।
জকিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আহমদ জানান, শনিবার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪.৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুর ১২ টায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি ছিলো ১৬.২৯ সেন্টিমিটারে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিকেল ৩টায় নদীর পানি বেড়ে ১৬.৩৪ সেন্টিমিটারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, বন্যা পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে ভোর থেকে ১০ টি ঝূঁকিপূর্ণ ডাইকে কাজ চলছে। কিন্তু এক জায়গায় কাজ শেষ করতে করতে অন্য এলাকার নতুন স্থানে ডাইক ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে খবর আসছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ জানিয়েছেন, বারহালের ও বিরশ্রীর একটি স্থানে ডাইক ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে এসেছে। অন্য কয়েকটি স্থানে বাঁধ উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঝূঁকিপূর্ণ ডাইকগুলোতে কাজ করেও পানি আটকানো যাচ্ছেনা। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা প্রতিরোধ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তিনি জকিগঞ্জ উপজেলাকে বন্যা পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে জনসাধারণকে ডাইকের প্রতি নজর রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, সুরমা-কুশিয়ারা নদীর যে এলাকার ডাইককে প্রাথমিকভাবে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো সেই স্থানগুলোতে কাজ করা হয়েছে। এখন নতুন নতুন এলাকায় ডাইক ঝূঁকিপূর্ণ হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বন্যা মোকাবেলা করতে দিনরাত চেষ্ঠা চালাচ্ছেন কিন্তু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।