৬ অক্টোবর ২০১৯, বিন্দুবাংলা টি.. কম, স্টাফ রিপোর্টার :
‘দেশ ক্রমেই অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে। রাঘব বোয়ালদের না ধরলে সরকারের চলমান দূর্নীতিবিরোধী অভিযান তামাশায় পরিণত হবে’।
এইসব মন্তব্য করেছেন,দেশবরেণ্য রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের বীর সংগঠক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস এবং সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা না থাকায় সরকারের আপাদমস্তক দূর্নীতিতে নিমজ্জিত। দেশ ক্রমেই অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যা দেশের মানুষের জন্য অশনি সংকেত। শুধুমাত্র চুনোপুঁটিদের ধরার নামে আইওয়াশ চলছে, ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার নাটক চলছে। আড়ালে থাকা ক্যাসিনো ও টেণ্ডার নিয়ন্ত্রক রাঘব বোয়ালদের ধরতে হবে, নইলে সরকারের চলমান দূর্নীতিবিরোধী অভিযান তামাশার অভিযানে পরিণত হবে।
ড.মোশাররফ আজ রোববার কুমিল্লার দাউদকান্দি সদরে তাঁর বাসভবনে দাউদকান্দি উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র নবগঠিত কমিটির নেতাদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এই সব কথা বলেন।
দাউদকান্দি উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রিয় নেতা ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে বিপুলভাবে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করেন, দুই নেতাও নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানিয়ে বরণ করেন।
এই সময় বিএনপির নীতিনির্ধারক ড.মোশাররফ বলেন, ক্যাসিনো অতিমাত্রায় বৃদ্ধি এবং টেণ্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ায় ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সরকার চুনোপুঁটিদের ধরে আইওয়াশ করছে । আড়ালে থাকা টেণ্ডার ও ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রক গড ফাদার এবং রাগব-বোয়ালদের ধরা হচ্ছে না। এদের ধরতে হবে, নইলে সরকারের শুদ্ধি অভিযান একটি তামাশায় পরিণত হবে।
তিনি বলেন, সরকারের দুঃশাসন, দূর্নীতি, লুটপাট ও কমিশনের কারণে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে । ব্যাংকগুলো খালি করে ফেলেছে। ব্যাংক নিঃস্ব হয়ে গেছে। সরকার সমর্থক ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না। এই খেলাফিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং আরও সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এই আ,লীগ নেতারা শেয়ার মার্কেটে ডাকাতি করছে। তারা দূর্নীতি ও লুটপাটের হাজার হাজার কোটি টাকা আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। কানাডা ও মালয়েশিয়ায় সেকেণ্ড হোম করছে।
ড.মোশাররফ বলেন, গণতন্ত্রের মাতা বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার জোর করে কারাগারে আটক রেখেছে। কোন অন্যায়ের জন্য নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ, অলিখিত বাকশাল পাকাপোক্ত, লুটপাট ও চাঁদাবাজি করার জন্য। খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে সরকার লুটপাট, দূর্নীতি,অনিয়ম করতে পারবে না বলেই তাঁকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সরকার বিচার বিভাগে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। জামিনযোগ্য মামলা হওয়া সত্ত্বেও দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষকে ভোট দিতে প্রস্তুত ছিল। উপায় না দেখে সরকার ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ডাকাতি করেছে। এই সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়, এটি ডাকাত,লুটেরা, সুবিধাবাদী, ক্যাসিনোবাদিদের সরকার।
ড.মোশাররফ বলেন,সরকার দেউলিয়া । তহবিল শূন্য। টাকা নেই। আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে। মহাসড়কে টোল বসিয়ে দেশ চালানোর চেষ্টা করছে। গত ৫ বছরে ৩ বার ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। জনগণের এই ট্যাক্সের টাকা কোথায় গেলো ? এই টাকা এখন আ.লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে। যারা ধরা পড়ছে তারা আ.লীগের চুনোপুঁটি। যুবলীগের একজন সমাজসেবা সম্পাদকের কাছে যদি হাজার কোটি টাকা থাকে, তাহলে আমরা জানতে চাই- আ.লীগের বড় বড় নেতাদের কাছে কত হাজার কোটি টাকা আছে ?
ড.মোশাররফ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতা-কর্মী এবং সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মারুফ হোসেন, দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি কেএম শামছুল হক, সি.সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির,সাধারণ সম্পাদক মো.আবুল হাশেম,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মাহামুদ,পৌর বিএনপির সভাপতি নূর মোহাম্মদ সেলিম সরকার, সহ-সভাপতি মো.মোস্তাক সরকার,সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন নাঈম সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন হিরণ,পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আলম সরকার ও খন্দকার বিল্লাল হোসেন সুমন, কুমিল্লা জেলা যুবদল সভাপতি ভিপি শাহাবুদ্দিন ভুইয়া ও দাউদকান্দি উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি রোমান খন্দকার প্রমুখ।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।