• সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
সর্বশেষ
যাত্রী বেশে ট্রলারে উঠে অপহরণকারীরা, দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি — পরে মিলল লাশ গজারিয়ায় সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন যুবতী এভারকেয়ারে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া মজলুম জালিম হচ্ছে, ফ্যাসিবাদবিরোধীরা ফ্যাসিবাদী হচ্ছে: মাহফুজ আলম হোমনা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা হকের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার গ্রামীণ জনপদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সুবিধা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সিলেটে দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত ক্ষমতা বা আসন ভাগাভাগির ভিত্তিতে সমঝোতায় যাবে না এনসিপি : নাহিদ ইসলাম নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা খারাপ হওয়ার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেঘনার জহিরুল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয় : কোলকাতা রেলের টিটিই বলেছিলেন সে করোনা রোগী!

নিজস্ব সংবাদ দাতা / ১০৮ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, এম এইচ বিপ্লব সিকদার : করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন মেঘনার জহিরুল। সে উপজেলার বকসিকান্দা গ্রামের জয়নালআবেদীনের ছেলে। এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেখে শনিবার রাত ৭ টার দিকে মেঘনা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জানতে চাওয়ার উদ্দেশ্যে মোবাইল নাম্বারে এই প্রতিবেদক কল করলে তিনি কল কেটে দেন। এ দিকে ‘সেয়ার বিজ ‘ সূত্রে জানা যায় বন্ধন ট্রেনে জহিরুলকে করোনা রোগী বলে কোলকাতা রেলের টিটিই বিনা টিকিটে গার্ডের হাতে তুলে দেন। লিখিত বিবৃতিতে এমনটিই বলেছেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি কোলকাতা থেকে খুলনাগামী বন্ধন ট্রেনের সিনিয়র গার্ড কৃষ্ণেন্দু বোস। কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে যাত্রী তালিকা দেয়ার সময় গোপনে এমনটি জানান। খবর পেয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা তটস্থ হয়ে পড়েন। জহিরুল দীর্ঘ সময় ট্রেনে লুকিয়ে থাকায় সন্দেহ ঘনীভূত হয় ও সম্ভাব্য পলায়ন ঠেকানো জরুরি হয়ে পড়ে। বেনাপোল কাস্টমস সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গত ২৯ জানুয়ারির সেমিনারে প্রশিক্ষণে করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশনার আলোকে কাস্টমস কর্মকর্তারা সতর্কতার সাথে জহিরুলকে খুঁজতে থাকেন। ট্রেনের নির্ধারিত বগির যে সিটে জহিরুল বসে এসেছিলেন সেখানে পাওয়া যায়নি। ভারতীয় গার্ডও তাকে চিহিৃত করতে পারছিলেন না। অনুসন্ধানকারীদের মধ্যে এসময় আতংক বিরাজ করছিল।

তাৎক্ষণিক স্টেশনে কর্তব্যরত ডাক্তারকে খবর দেয়া হয়। পরবর্তীকালে শার্শা থেকে টীমে আরো ডাক্তার যোগ দেন। তারা নিবারনী পোশাক পরে দীর্ঘক্ষণ খুঁজে সবাই মিলে একজনকে সন্দেহ করেন। তার পাসপোর্ট দেখে গার্ডের দেয়া তথ্যের সাথে নামের মিল পান ও জহিরুলকে বের করে নিয়ে আসেন। তার শরীরের তাপমাত্রা মেপে প্রাথমিকভাবে তার মধ্যে লক্ষণ দেখে করোনা রোগী বলেই সন্দেহ করেন বলে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) কামরুল ইসলাম জানান।

ডাক্তাররা যশোরে কথা বললে, যশোর অফিস তাদেরকে ঢাকায় কথা বলার পরামর্শ দেন। ঢাকায় কথা বলে ডাক্তাররা জানান, জহিরুলের মধ্যে করোনা ভাইরাস নেই। তবে চিকিত্সকরা কোনভাবেই লিখিত সনদ দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। কাস্টমস কর্মকর্তা কামরুল দৃঢ়ভাবে তাদেরকে লিখিত দিতে বলেন, না হলে ট্রেন ছাড়া যাবে না বলে জানালে ডাক্তার আজিম উদ্দিন লিখিত সনদ দেন। এ বিষয়গুলো সময়ে সময়ে এসি, আইআরএম ও কমিশনারকে তারা জানান।

পারিপার্শ্বিকতা ও পরিস্থিতির আকস্মিকতায় কাস্টমস কর্মকর্তারা জহিরুলকে করোনা রোগী ভাবতে প্রলুব্ধ হন। যার মধ্যে রয়েছে, ভারতীয় রেলগার্ড কর্তৃক যাত্রী তালিকা হস্তান্তরের সময় নাম বলে করোনা রোগী হিসেবে পরিচয় করা; ভারতীয় রেলওয়ে চিকিৎসক টীমের মৌখিক উদ্ধৃতি,  একইভাবে ভারতের টিটিই কর্তৃক করোনা ভাইরাসের রোগী পরিচয়ে ট্রেনে হস্তান্তর, বিনাটিকিটে যাত্রীকে ট্রেনে তুলে দেয়া, স্টেশন থেকে চিকিৎসকদল ও বিএসএফ কর্তৃক পুশব্যাক, জহিরুলের পাসপোর্টে ভারতে এন্ট্রিরেস্ট্রিকটেড সীল প্রদত্ত, বেনাপোল পৌঁছে ট্রেনে লুকিয়ে থাকা ও পাসপোর্টে চীনের ভিসা ও সম্প্রতি চীন ফেরত, জহিরুলের শরীরে জ্বর থাকা, কর্তব্যরত চিকিৎসক টীমের সন্ধিগ্ধতা এবং করোনামুক্ত ঘোষণা ও লিখিত সনদ দিতে বিলম্ব। এ ধরণের পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল যেকেউ আত্মরক্ষার ও নিবারণী পদক্ষেপ নেবেন।

সূত্র আরো জানায়, একইভাবে কাস্টমস কর্মকর্তারাও পলাতক যাত্রীর সম্ভাব্য পলায়ন ঠেকাতে ও বাড়তি সতর্কতার জন্য ফেসবুকে প্রচারের উদ্যোগ নেন। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, চেকপোস্টে কর্মরত কর্মকতাদের সতর্কতার জন্য যাত্রীর ছবি ও পাসপোর্টের ছবি ফেসবুকে দেয়া হয়। দশ হাজার যাত্রী, বেনাপোল বসবাসকারী হাজার হাজার সরকারী কর্মচারী, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাস্টমসের পক্ষ থেকে একজনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ‘করোনা ভাইরাস নেই মর্মে চিকিৎসকের সনদ পাবার পরপরই সে পোস্ট ডিলিট করা হয়।

বেনাপোল রেলস্টেশন সুরক্ষিত প্রাচীর দেয়া নয়। কিংবা বিমানবন্দেরের মতো নয়। এখান থেকে যে কারো দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব। কর্তব্যরত কাস্টমস টীমের  দায়িত্ববোধ ও বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে কাস্টমস কর্মকর্তারা সবাইকে জানানোর উদ্যোগ নেন। সীমান্তবর্তী স্থলবন্দর দিয়ে যাতে এমন রোগী হলে পালাতে না পারে।

বিষয়টি চিকিৎসকদের সনদের ভিত্তিতে সুরাহা হবার পর কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেন।সেখানে ভারতীয় রেল গার্ডের বিবৃতি সংযুক্ত করে বলেন, “তিনি (ভারতীয় গার্ড) বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছেন, ভারতীয় টিটি তাকে এ যাত্রীকে হস্তান্তর করেছেন। বিভ্রান্তির ওখান থেকে সৃষ্টি! এমন খবর পাবার পর দায়িত্বশীলতা থেকে আমরা সবাইকে সতর্ক করেছি।

বেনাপোল একটি সীমান্তবর্তী জায়গা! যে কারো পালানো বা আত্মগোপন করা কঠিন নয়। তাই তাৎক্ষণিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়া হয়। আমাদের সাড়ে তিন শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী, বেনাপোলবাসী ও দশ হাজার যাত্রীর নিরাপত্তা ও সচেতনতার জন্য সবাইকে জানানো জরুরি মনে হয়েছে।স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তিনি সুস্থ প্রমাণিত হওয়ায় বিষয়টি সুরাহা হয়েছে, বিবেচনার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। দয়া করে ভুল বুঝবেন না! ভুল ব্যাখ্যা করবেন না। আমরা তাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের কাছে হস্তান্তর করেছি। এ বিষয়ে সৃষ্ট ভুল বোঝা ও সংশয়ের জন্য আমি আমার টীম আন্তরিকভাবে দু:খিত!চ্

সূত্র জানায়, বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্ত গত দুবছর নিয়মতান্ত্রিক ও আইনানুগ দৃঢ়তার সাথে কাজ করতে গিয়ে বেলাল চৌধুরী অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। এ দুর্বৃত্তরা এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন এবং পানি ঘোলা করছেন। ভালো কাজকে খারাপ দেখানোর উদ্দেশ্য নিয়ে গত দুবছর তদ্বিরে ব্যর্থ এক শ্রেণির সুবিধাবাদীদের দিয়ে প্রতিশোধমূলক অপপ্রচারে নেমে পড়েন।

সূত্র আরো জানায়, করোনা ভাইরাস সচেতনতায় বিভিন্ন দপ্তরের দুশো কর্মকতা কর্মচারী নিয়ে সেমিনার করা ও নিজ দপ্তরের সরকারী অর্থে আপ্যায়ন করা কমিশনারের কাজ নয়। ফেসবুকে বেনাপোলবাসীকে সতর্ক করাও তার কাজ নয়। এসবই তার অপরাধ গণ্য করেকিছু সুযোগ সন্ধানী ও দুর্বৃত্ত গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যবহার করে বিদ্বেষাত্মক সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছে। ইতোপূর্বে ৬৭ মন ভায়াগ্রাআটক করায় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। সে যাত্রায় কিছু করতে ব্যর্থ হয়ে এবারও একই গোষ্ঠী মাঠে নেমেছে বলে অভিজ্ঞরা অনেকে মনে করেন। তবে বেনাপোলবাসীর জন্য করোনা সচেতনতা সেমিনার ও ফেসবুকে সতর্ক করার মন মহতি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বেনাপোলবাসী তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন

এই জাতীয় আরো খবর দেখুন