১৭ এপ্রিল ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, এম এইচ বিপ্লব শিকদার : চল্লিশের কোঠায় বয়স মহামারি বলি আর যুদ্ধ বলি কিছুই চোখে দেখিনি। মুরুব্বিদের মুখে আর পত্র পত্রিকা সহ বিভিন্ন ইতিহাস পড়ে যতটুকু জেনেছি। বহুমতের ও স্বাধীন জাতির নাগরিক হওয়ায় একেক ঘটনার ইতিহাস নিয়ে ও ধুম্রজালে আছি। একাধিক দলের শাসন, ইতিহাস ও ভিন্ন ভিন্ন উপস্থাপন । যার মগজে যে চেতনা গ্রাস করেছে সে চেতনা লালনেই আমরা ব্যস্ত হয়ে পরি। চেতনার ভিন্নতা যেন আমাদের আজ বিভক্তি, বৈষম্য, এমন ভাবে গ্রাস করেছে ভুলে যাচ্ছি বন্ধুত্ব, ভুলে যাচ্ছি মমত্ব, ভুলে যাচ্ছি কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ, কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা। চেতনার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি মনে হয়। আজ গোটা বিশ্ব এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যেন মনে হয় আমি যা শিখেছি, যা দেখেছি সবই অতীত হতে চলছে। পরিবর্তনশীল চিরাচরিত নিয়ম হলেও আজ যেন পরিবর্তনের ও পরিবর্তন চলছে। বৈশ্বিক মানব সভ্যতায় আজ এক অদৃশ্য শক্তির কালো ছায়া পড়েছে। অন্ধকার আর অন্ধকার। কোভিড -১৯ নামক ছায়া শক্তির কাছে মানব জাতি কিনারাহীন। এটা “মানুষ খেকো “কাউকে ছাড় দিচ্ছেনা, ধনাঢ্য, যে ক্ষমতার লড়াইয়ে অতি শক্তির অধিকারী তাকেও না। জ্ঞান, বিজ্ঞান আজ মানুষ খেকো কোভিড ১৯ এর কাছে অসহায়। সারা পৃথিবীতে লাশের মিছিল, সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলেই শুধু দূ: সংবাদ। পুরো আকাশ ভারি হয়ে গেছে মানবের আহাজারিতে। কে মরবে কে বাচবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই। এই অদৃশ্য শক্তির হাত থেকে রেহাই পেতে একেক রাষ্ট্র লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে কাজ করছেন। অবাধ তথ্য প্রবাহের যোগে ইতিবাচক তথ্যটা যেমন বাতাসের সাথে চলে আসে ঠিক নেতীবাচক তথ্যটাও বাতাসের গতিবেগে চলে আসে।চলমান সময়ের তথ্যগুলো শুধু দূঃসংবাদ ই আসে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের দিকে চীনের ওহানেই প্রথম আঘাত হানে মানুষখেকো কোভিড, বিশ্ব মোড়লীরা কেউ কেউ দাবি করছেন সেই চীন ই এই কোভিডের জন্মদাতা,। সেখান থেকে ধাপে ধাপে ছড়িয়ে পরলো সারা বিশ্বে। লক্ষ লক্ষ প্রান কেড়ে নিচ্ছে। আর যারা এখনো দুনিয়ার আলোতে আছেন তারাও কত প্রকার পদ্ধতি গ্রহণ করে চলছে তার কোন হিসাব নেই। জীবন পরিচালনায় যা অভ্যস্ত তার পরিবর্তন ঘটিয়ে চলা যে কত দূঃসাধ্য আজ বিশ্ব বাসী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও কোভিড ১৯ এর করাল গ্রাস থেকে রেহাই পায়নি। মার্চ মাসের ৮ তারিখ প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় বাংলাদেশে। সেই থেকে শুরু বাঙালি জাতির করোনা যুদ্ধ। জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলছে কোভিডের হানা। নিয়ে নিচ্ছে একেকটা তাজা প্রান। প্রত্যক্ষ করছি যুদ্ধ কাকে বলে। ইতিহাসের সকল যুদ্ধের কারন বা রকম যদিও এক না কিন্তু প্রতিরোধ করার কলাকৌশলের যে বাস্তবায়ন বিষয়ক চেতনা জাগ্রত করা ভাইরাস যুদ্ধ থেকে কিছুটা অনুমান করছি। বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতি পূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশের মানুষ অনেক অসচেতন। সবই ঠিক আছে, যে খানে বিশ্বের সভ্য, ক্ষমতাধর, বিজ্ঞানের ধারক বাহক, মানবতার দেশ সবাই দিশেহারা হয়ে আকাশ পানে তাকিয়ে আছে। তাদের যুদ্ধে অনেক সরঞ্জামের তেমন কোন অভাব না থাকলেও বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ টা চালিয়ে যেতে যে সরাঞ্জামদি দরকার তা যথাযথ সময়ে না পেলেও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে গ্রহন করেছে কৌশল। নাগরিকদের বিভিন্ন মত থাকলেও, রাস্ট্র ক্ষমতায় যারা আছেন তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে কোন পিছনে হটছেনা। আপাত দৃষ্টিতে একটি কথা বার বার অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন তথ্য গোপন করা যা শুরু থেকেই শুনে আসছি। আমি মনে করি এই ভাইরাস প্রতিরোধের যুদ্ধে আমাদের দেশের মানুষের জীবন যাত্রার কথা মাথায় রেখে তথ্যের ভারসাম্য রক্ষা করে ধারাবাহিক যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছেন সেটা বড় কৌশল। আমরা যথেষ্ট আবেগ প্রবণ জাতি। আজকে ডাক্তার, স্বাস্থ্য কর্মী, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক, ব্যংকারদের জীবন বাজি রেখে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন এটা শুধু চাকরি, প্রণোদনা, বা আনুষঙ্গিক সুবিধার জন্য না প্রতিটি দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিজের বিবেক থেকে দেশপ্রেম থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাল তলোয়ার ভরপুর জাতি গুলো যেমন যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং পরিস্থিতির চিত্র যা ফুটে উঠেছে যা হয়েছে বাংলাদেশের যুদ্ধটাও কোভিডের মোকাবিলায় জ্যামিতিক হারে প্রায় একই। তবে আমরা বাঙ্গালী বিশ্বের চোখে আমরা যেমনই হই আমরা যদি কোন দল, গোষ্ঠীর চিন্তা মাথায় না এনে সব কিছুর উর্দ্ধে উঠে মানুষের যুদ্ধ কোভিডের বিরুদ্ধে, আমাদের সকলের বেচে থাকার যুদ্ধ। একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের ক্ষয় ক্ষতির হিসেব টা যা হচ্ছে আমাদের বেলায় হয়তো কম বেশি হবে তেমন একটা না প্রায় সমান তালেই হতে পারে। স্বাস্থ্য বিভাগ এতদিন যাই বলেছে ১৬ এপ্রিল স্পষ্ট বলে দিয়েছেন সারাবাংলাদেশ ই করোনা ঝুঁকিতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সমস্ত উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সব স্বিদ্ধান্ত সঠিক, জরুরি সেবায় সাংবাদিকদের বিষয়ে আপনি কিছু বলেন এরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে, ইতিমধ্যে অনেকে আক্রান্ত হয়েছে তাদের পরিবার পরিজন আছে, অধিকাংশ সাংবাদিক বেকার থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, শুধু দেশপ্রেম আছে বলে। আজকের দিনে কিন্তু অনেক প্রিন্ট মিডিয়া বন্ধ হয়ে গেছে অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পরে অনলাইন ভার্সন চলছে। দায়িত্বটা কিন্তু সঠিক ভাবে যার যার অবস্থান থেকে মফস্বল সাংবাদিকরা ও কাজ করে যাচ্ছেন। আজকে পর্যন্ত কোনরূপ প্রতিস্রুতি ছাড়া, এটা কি দেশ প্রেম নয়? মানুষ আইন মেনেছে, প্রশাসনের কথা শুনেছে, দেরি করলেও সারাজীবনের জীবন পরিচালনায় পরিবর্তন এনে নতুন নিয়মে চলছেন এটাই বা কম কিসের। এখন দরিদ্র, ধনীর হিসেব নেই শুধু ঘরে রাখতে হলে অন্তত খাবার দিয়ে যেতে হবে। না খেয়ে কেউ আদেশ বলেন উপদেশ বলেন মানবেনা। ঘরে বসে না খেয়ে মরার চাইতে মরবো মাথায় নিয়ে বের হয়ে যাবে কারণ বাবারা কখনো সন্তানের অভুক্ত সহ্য করতে পারেনা। এতে তৈরি হবে সমাজে বিশৃঙ্খলা, মাথায় অর্থনৈতিক চাপ থাকলে মেজাজ ভালো থাকেনা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রানহানীর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এহেন পরিস্থিতি আল্লাহ না করুক করোনার চেয়ে ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে। সুষম বণ্টন করে প্রতিটি পরিবারকে পুলিশ প্রশাসন সহ সশস্ত্র বাহিনী সহ নির্বাহী প্রশাসনের উপর তালিকা প্রস্তুত কে গুরুত্ব দিয়ে উপহার সামগ্রী বিতরণ করলে আমাদের দেশপ্রেমিক যুদ্ধারা ইনশাআল্লাহ ভালো ফল করবে। জয় হবে মানবতার। যদি তালিকা প্রস্তুত থেকে শুরু করে বিতরণ কার্যক্রম অসংগতিপূর্ণ হয় তা হলে করোনা নয় অব্যবস্থাপনায় মরতে পারে অনেক। তাই করোনা প্রতিরোধে ঘরে থেকে না মরে না খেয়ে মরতে চাইনা।
লেখক – সম্পাদক ও প্রকাশক : বিন্দুবাংলা টিভি. কম, আজকের মেঘনা ডটকম।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।