৯ মে ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্ট :
বাংলাদেশের বরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী
ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ।
তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় আজ তার পরিবার নিজ বাড়ীতে মরহুমের দোওয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে ।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া তত্ত্বীয় পরমাণু বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করেছেন দীর্ঘ সময় ধরে। তাঁর লেখা বই এবং অভিসন্দর্ভ পড়ানো হচ্ছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
লেখক, এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্নাতক পর্যায়ের বিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন,
ইংরেজিতে লেখা গ্রন্থদ্বয়ের নাম
তারঁ অন্যতম গ্রন্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ৪৬৪ পৃষ্ঠার সুপরিসর এই গ্রন্থে বাংলাদেশের বহুল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। তার আরেকটি গ্রন্থের নাম বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র যা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড কর্তৃক ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
জীবনী সম্পাদনা
তার ডাক নাম সুধা মিয়া। তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা আব্দুল কাদের মিয়া এবং মাতা ময়েজুন্নেসা। তিন বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সর্ব কনিষ্ঠ। তিনি চককরিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
মানসম্মত লেখাপড়ার জন্য তাকে রংপুর জিলা স্কুলে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকেই তিনি ডিসটিনকশনসহ প্রথম বিভাগে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন।
১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন।
১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাশ করেন।
১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
গ্রামময় রঙের খেলা। উজ্জ্বল নীল আকাশ, সাদা-কালো মেঘ, পাকা ধানের ক্ষেত
সোনালি আভায় উদ্ভাসিত। যেদিকে চোখ যায়- দিগন্তছোঁয়া সবুজের শোভা পায়
পাতার ফাঁকে, পুকুরের জলে রোদের লুকোচুরি। এমন আলো-ছায়াঘেরা প্রকৃতির অমিত প্রাণশক্তি নিয়ে রংপুর থেকে ঢাকায় এসেছিলেন এক তরুণ,মেধাবী, সাহসী, উদ্যমী, কর্মঠ কিন্তু একটু অন্তর্মুখী।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের সতীর্থরা,ছাত্র রাজনীতির বন্ধুরা সবাই দিনে দিনে টের পেয়ে যায়- অন্তর্মুখী এই ছেলেটির মাঝে কী যেন একটা আছে।
আর ছেলেবেলায় ছোট্ট সুধার মুখে ভাত তুলে দিতে দিতে মা কতবার ভেবেছেন- এই যে সুযোগ পেলেই একা একা চুপটি করে বসে থাকে ছেলেটা, কেন যেন সে অন্যসব শিশুর মত নয় ! হ্যাঁ, মায়ের সেই সুধা, সুধা মিয়া-ই দেশের কৃতী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।
সমাজের চিরচেনা মানুষের গতানুগতিক মানসিকতার সঙ্গে যাঁর ছিল বরাবরই একটু তফাত।
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও, রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর সবচেয়ে কাছাকাছি থেকেও কোনদিন তিনি ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি।
ক্ষমতার উত্তাপের বিপরীতে তিনি ছিলেন স্থির, অচঞ্চল, নিভৃতচারী ও নিষ্কলুষ একজন মানুষ। যিনি নিজের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতায় তিনি ক্রমে ক্রমে হয়ে উঠেছেন সত্যিকার আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষের প্রতিচ্ছবি।
রংপুরের নিভৃতপল্লীর সেই ছোট্ট সুধা মিয়া আজ নিজগুণে দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে বিশ্বজুড়ে চিরভাস্বর। বিজ্ঞান আর মানবিকতার চর্চা সুধা মিয়াকে নিয়ে গেছে এক অনন্য অবস্থানে। তাঁর অবদানের কারণেই পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে এদেশের মানুষ স্মরণ করবে চিরদিন।
সময়টা ১৯৬৭ সাল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ। ছয় দফা আন্দোলনের কারণে গোটা দেশে তখন বিরাজ করছে ভীতিকর পরিস্থিতি। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৭ নভেম্বর পবিত্র শবেবরাতের রাতে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের পছন্দের পাত্র, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেধাবী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা।
বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাবা শেখ মুজিব জেলে থাকায় তাঁদের বিয়ের আয়োজনটি ছিল খুব সাদামাটা। বিয়ের পরদিন জেলগেটে ওয়াজেদ-হাসিনা নবদম্পতিকে দোয়া করেন বঙ্গবন্ধু। নতুন জামাইকে সে সময় তিনি একটি রোলেক্স ঘড়ি উপহার দেন। সেই উপহার আজীবন সযত্নে রেখেছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।
বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী। পদার্থ বিজ্ঞান ও বহুল পঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক লেখক। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।