১৭ জুলাই ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্ট :
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন উদ্যোক্তা, রাইডশেয়ারিং পাঠাও-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটন এলাকার নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিম সালেহের ৩৩ টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। যদিও হত্যার রহস্য এখনও জানা যায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা করার পর একজনকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে অপরাধী পাগলের ভান করছে। সেজন্য তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আটক ওই ব্যক্তির কাছ থেকে পুরো ঘটনার তথ্য বের করে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক পুলিশের তদন্তকারীরা ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালিয়ে আলামত সংগ্রহ করে নানান তথ্য দিচ্ছেন। আশপাশের রাস্তা ও ভবনে যতো সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলোর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও এনওয়াইপিডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ফাহিমকে হত্যার পর টুকরো টুকরো মরদেহ সুটকেসে ভরে কোথাও সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল খুনির, যাতে তাকে নিখোঁজ উল্লেখ করা যায়। তবে খুনির কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার জন্য কেউ নিচ থেকে কলিং বেল দিয়েছিলেন, সে শব্দেই ঘাতক সবকিছু ফেলে ভবনের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি ব্যবহার করে পালিয়ে যান।
আপাতত ব্যবসায়িক কারণেই হত্যা বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নাইজেরিয়ার শত্রুদের সন্দেহ করা হচ্ছে। মৃত্যুর আগে ফাহিমের বিরুদ্ধে নিউ জার্সির এক কারাকর্মীর করা মামলা চলমান ছিল। ফাহিমের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে করা মামলায় ক্রিক ইডি নামে ওই ব্যক্তি প্রতারণার অভিযোগ আনেন। ওই ব্যক্তির ভাষ্য, ফাহিমের তৈরি প্র্যাঙ্কডায়াল অ্যাপ ব্যবহারের সময় তিনি ভেবেছিলেন, তিনি যা করছেন, তা বৈধ। যদিও অ্যাপটি ব্যবহার করে ওই ব্যক্তি গোপনে অন্যদের কথা রেকর্ড করেছিলেন।
এদিকে ফাহিম সালেহের খুনির গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে যে অপরাধের কথা উঠে আসছে তা আমরা এখনও মেনে নিতে পারছি না। হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া কোনও কথা বা পদক্ষেপ আমাদের মনকে শান্ত করতে পারবে না।
এতে আরও বলা হয়েছে, এনওয়াইপিডি ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমাদের আহ্বান তারা এই নৃশংস অপরাধের সবকিছু উন্মোচন করবেন এবং ফাহিমের জন্য
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন। ফাহিমের হত্যাকাণ্ডকে তার পরিবার অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম পড়াশোনা করতেন তিনি। ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফিরে যৌথভাবে ‘পাঠাও অ্যাপথ চালু করে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। নিহত ফাহিম সালেহ বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাও ছাড়াও নাইজেরিয়ায় ‘গোকান্ডাথ নামে আরেকটি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম চালু করেন।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।