November 25, 2024, 2:32 pm

প্রয়োজনে কঠিন সিদ্ধান্ত আসবে: ওবায়দুল কাদের

২৪ নভেম্বর ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা দিন দিন বাড়ছে। প্রয়োজনে কঠিন সিদ্ধান্ত আসবে। মানুষের জীবন আগে। জীবন না থাকলে জীবিকা দিয়ে কী হবে। কাজেই সব দিক চিন্তা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পুরো লকডাউন সম্ভব না, পাকিস্তান করতে পারেনি, ভারত যা করেছে তাতেও লাভ হয়নি। রোজ রোজ সংক্রমণ বাড়ছে। এ বিষয়ে সরকারের প্রস্তুতি আছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি মনিটরিং করছেন। তবে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যারা মাস্ক পরবে না জরিমানা হবে। এ বিষয়টি স্পষ্ট।

সরকার কী ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত হতে পারে যদি কোনো রেস্ট্রিকশন দিতে হয় সেটিও হতে পারে। কড়াকড়ি করা হবে। যেমন ফ্রি স্টাইলে মাস্ক না লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো। মানুষের এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

র‌্যাবের অভিযানে বিপুল অর্থসহ গ্রেপ্তারের পর গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে আলোচনায় আসা গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে কারা কারা জড়িত, কারা তাকে সহযোগিতা করেছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

গণমাধ্যমে এসেছে ‘গোল্ডেন মনির সরকারদলীয় একজন প্রতিমন্ত্রীকে গাড়ি দিয়েছেন এবং এমপিদের সঙ্গে তার যোগসাজশ ছিল’- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে সে খবর বের হওয়ার পর উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সেটার তদন্ত করছে। কোন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক, আর কোন কোন এমপির সঙ্গে তার যোগাযোগ সে বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তার বাসায় ২০০ এর বেশি প্লটের কাগজ পাওয়া গেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, এরসঙ্গে যারা যারা জড়িত, যারা তাকে হাতিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এখানে শুধু অপকর্মকারী যে প্রত্যক্ষভাবে করেছে তা নয়, তার মদতদাতা কে সেটাও দেখবে। দুইটাই তদন্ত হচ্ছে, দুইটাই ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দুইটাতেই যারা অপরাধী, অপকর্মকারী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিদেশে অর্থপাচার প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানি কানাডার বেগমপাড়া নিয়ে যে কথা আছে সেটা ঠিকই। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন এ ধরনের অভিযোগ আছে এবং পাচার হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দুদককে তদন্ত করতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। তিনি বলেছেন তারা তদন্ত করে দেখুক এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার। এর সঙ্গে জড়িত যে থাকুক সে প্রশাসনের লোক হোক। পাচারকারীকে পাচারকারী হিসেবেই দেখতে হবে, সে কি আওয়ামী লীগের নাকি প্রশাসনে আওয়ামী লীগ ঘেঁষা কোনো কর্মকর্তা- সেটা তো দেখার বিষয় না।

পাচারকারীদের নাম প্রকাশ করা হবে কিনা- জানতে চাইল সেতুমন্ত্রী বলেন, যখনই দুদকের তদন্ত শেষ হবে তখন নাম আসবে। নাম আসবে না কেন?

আসন্ন পৌরসভার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ২৫টি পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ২৮ তারিখ সাড়ে ৩টায় পার্টির স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। সেখানে ২৫ জনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করব। আজ থেকে মনোনয়ন জমা শুরু। দল তো এখন অনেক কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। দেখতে পাচ্ছেন বিভিন্ন বিষয়ে সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। অপকর্ম করে দলীয় পরিচয়ের কেউই এ পর্যন্ত রেহাই পায়নি এবং দলীয় পরিচয় কারও আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না। কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলো কেউ চিন্তাও করতে পারে না, সেসব বিষয়ও আসছে। এই যে গোল্ডেন মনির এসব নাম শুনিওনি। এসব ব্যাপারে আসলে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি বলে দিয়েছি ধর্ষক ও নারী অবমাননা করে এমন কোনো অপরাধী যদি আওয়ামী লীগে বা কোনো সহযোগী সংগঠনেও ধরা পড়ে তাদের জন্য চিরতরে আওয়ামী লীগের দরজা বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু সাসপেন্ড করে দায়িত্ব পালন করলে হবে না। এ ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত কঠোরতা অবলম্বন করছি এবং কাউকে ছাড় দেয়ার মানসিকতা নেই।

তিনি বলেন, দু’টি জেলার প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি আমরা পরিবর্তন করেছি, যারা পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পরবর্তী জয়েন্ট সেক্রেটারি; গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেখানে কিছু অন্তর্কলহ আছে, তারা সেগুলো দূর করতে পারছিলেন না, সামাল দিতে পারছিলেন না বলে নতুন নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। যেখানে যেখানে সমস্যা দেখা যাবে তাদের পরিবর্তন করা হবে, আমি আগেও বলেছি দলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আমাদের আর কেউই অপরিহার্য নয়। কাউকে কোনো পদ চিরস্থায়ী লিজ দেয়া হয়নি।

বিদ্রোহীদের বিষয়ে তিনি বলেন, সবার ওপরই জনগণ। আমাদের দলে হয়তো একজন দায়িত্বে আছে দীর্ঘদিন। কিন্তু যখন নির্বাচনের প্রশ্ন আসে তখন তার জনপ্রিয়তার প্রশ্ন। সেই জনমত জরিপ বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সোর্সে খোঁজ-খবর নিয়ে যে বেশি জনপ্রিয় তাকেই দেয়া হচ্ছে। যাদের কথা বলছেন তাদের কিন্তু ক্ষমা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বিদ্রোহে আর যাবে না সে শর্তে প্রধানমন্ত্রী তথা পার্টির সভাপতির কাছে ক্ষমা চেয়েছিল, তাদের ক্ষমা করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়েছে এমন কাউকে দেয়া হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা