November 25, 2024, 9:53 pm

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২ বছর বাড়ানোর দাবি

১১ জুন ২০২১, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেড় বছরের বেশি সময় নষ্ট হওয়ায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জনসমাবেশ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। জনসমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা। এদিনের সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাকরিপ্রার্থীরা যোগ দেন।

তারা শাহবাগ থেকে সমাবেশ শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যাওয়ার পথে শাহবাগ থানার সামনে কিছু সময় অবস্থান করেন। এসময় করলে পুলিশ তাদের তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন সমাবেশে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের। পরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষার্থীরা সমাবেশ থেকে মুজিববর্ষের উপহার, ৩২ হোক ৩২ হোক, বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নেই-ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে চাকরিপ্রত্যাশীরা মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখকৃত ‘প্রতিশ্রুতি (বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ)’ অনুযায়ী করোনাকালে ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার দাবি জানান।

চাকরির বয়স ৩২ করার দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, করোনাকালীন অচলাবস্থায় সব বয়সের শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছে। ১৯৯১ সালে শেষবার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ করা হয়, যখন গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর। এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৬ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ বছর হলেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় বাড়ানো হয়নি।

তারা আরও জানান, ২০১১ সালে এসে অবসরের বয়স বেড়ে হয় ৫৯ আর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হয় ৬০ বছর। অবসরের মেয়াদ যেহেতু ২ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে, সেক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করলে সেটাও আর সাংঘর্ষিক হয় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অক্ষয় রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখিত ‘প্ৰতিশ্ৰুতি’ অনুযায়ী করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ উন্নীত করার জোরালো দাবি ও আবেদন জানাচ্ছি।’

সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ রহমান সেতু বলেন, করোনার এই অচলাবস্থায় সব বয়সের শিক্ষার্থী-চাকরিপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছেন যা দুই বছরের দিকে ধাবমান। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা ৩০ হওয়ায় করোনার শুরুতে যাদের বয়স ২৮ ছিল তাদের সময় শেষ হওয়ার পথে। এ মুহূর্তে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করা না হলে আমাদের বেঁচে থাকার কোনো মানসিকতা থাকবে না।

নওগাঁ থেকে আসা নিলুফা ইয়াসমিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে বহির্বিশ্ব আপনাকে মাদার অব হিউমিনিটি উপাধিতে ভূষিত করেছে। আপনি আজ আমাদের মতো বেকারদের দিকে তাকান। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করে আমাদের হতাশা থেকে মুক্ত করুন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আজ আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কারামুক্তির দিন। আপনি এই দিনে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। আজকের এই দিনে আমাদের খালি হাতে ফিরিয়ে দেবেন না। চাকরির বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩২ করে পরিবারের বোঝা হওয়া থেকে আমাদের মুক্তি দিন। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজধানীর সাত কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা