May 5, 2024, 9:36 pm
সর্বশেষ:
নির্বিঘ্নে সবাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন : অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদএমপি মেঘনায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় মাদ্রাসার বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করেছে অধ্যক্ষ মেঘনায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় একাধিক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দুদকের পরিচালক থেকে মহাপরিচালক পদে পদন্নোতি পেলেন শিরিন পারভীন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মন্ত্রী–এমপিদের চাপে মাঠ প্রশাসন,  স্পিকারকে চিঠি দেবে ইসি মেঘনায় পাকের ঘরে রাতে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা মেঘনায় ফেসবুক ‘ফেক’ আইডির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর অভিযোগ শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হেট্ট্রিক করতে ভোটারের দ্বারেদ্বারে শিরিন

নির্বাচন কমিশনের পরিচালকের বিরুদ্ধে দুপুরে মামলা, বিকালে দুদক কর্মকর্তা বদলি

১৭ জুন ২০২১, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করার ঘটনায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির ৪ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। অপরাধ সংগঠিত করার সময় আসামিরা সবাই নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে দুদক জেলা কার্যালয়-২ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন।

মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা (বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক) খোরশেদ আলম, কক্সবাজারের রামু উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মাহফুজুল ইসলাম, পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রাসেল বড়ুয়া ও পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কার্যালয়ের সাবেক টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মো. মোস্তফা ফারুক। তারা সবাই চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী ছিলেন।

মামলা দায়েরের পর বিকালে মামলার বাদীকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলির আদেশ দেয় ‍দুদক। জানা গেছে, দুদকের ২১ জনের বদলি আদেশে শরীফ উদ্দিনের নাম আছে। এ বিষয়ে দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, শরীফ উদ্দিনের এই বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন জানান, দুদক চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা (বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক) খোরশেদ আলম, জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক উচ্চমান সহকারী মাহফুজুল ইসলাম, সাবেক অফিস সহায়ক রাসেল বড়ুয়া, পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মোস্তাফা ফারুকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তা ছিলেন আসামি খোরশেদ আলম। তার দায়িত্বকালে ভোটার হালনাগাদ কাজে ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনের একটি ল্যাপটপ মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে পাঠানো হয়। পরে মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ল্যাপটপটি ফেরত পাঠান। কিন্তু ল্যাপটপটি ফেরত পাঠালেও জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সেটি জমা হয়নি। পরে দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের এই ল্যাপটপ সংঘবদ্ধভাবে গায়েব করে ইসি কর্মচারী মাহফুজুল ইসলাম, রাসেল বড়ুয়া, মোস্তফা ফারুক। এই সংঘবদ্ধ চক্র ইসির গায়েব করা ল্যাপটপের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। আর গায়েব হয়ে যাওয়া ইসির ল্যাপটপ জমা না হওয়ার বিষয়টি জেনেও কোনোরকম ব্যবস্থা নেননি ইসির কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। এমনকি বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত ও তার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকাসংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটির দায়িত্বে ছিলেন এই খোরশেদ আলম। ২০১৯ সালে ইসি কার্যালয়ে ওই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেন তিনি। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ল্যাপটপ গায়েব হওয়ার বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।

এ প্রসঙ্গে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে ভোটার হালনাগাদ চলাকালে নির্বাচন কমিশনের একটি ল্যাপটপ গায়েব হয়ে যায়। পরে এই ল্যাপটপের মাধ্যমে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলার তিন আসামি ইসির কর্মচারীরা এসব যোগসাজশে করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন খোরশেদ আলম। ওই সময়েই তার অধীন তিন কর্মচারী রোহিঙ্গাসহ ৫৫ হাজার ৩১০ জনকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বিষয়টি জেনেও অবৈধ সুবিধা নিয়ে তিনি অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই তাদের চারজনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২০১/৪০৯/১০৯ ধারায় মামলা হয়েছে।

মামলা তদন্তকালে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পেলেও আমলে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, রোহিঙ্গা দম্পতিকে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় নির্বাচন কমিশনের তিন কর্মচারী ও দুই রোহিঙ্গাসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আলাদা একটি মামলা করেছে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত বাদী হয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এ মামলা করেন।

মামলায় নির্বাচন কমিশনের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন, নূর আহম্মদ, সাবেক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নঈম উদ্দিন, ওবাইদুল্লাহ, শামসুর রহমান, রোহিঙ্গা ফয়াজ উল্লাহ ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুনকে আসামি করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা