২৪ জুন ২০২১, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের পর বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিও নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
এসব ভিডিও বিশ্লেষণে অনেকে বলছেন- অভিযোগ করে উল্টো পরীমনিই ফেঁসে যাচ্ছেন কিনা!
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বোট ক্লাবের আরও একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে এটি স্পষ্ট যে, পরীমনি ক্লাবের ভেতরে সবার সঙ্গে স্বেচ্ছায় মদ্যপান করছেন। সঙ্গে ছিলেন অমি ও জিমি।
ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, উত্তেজিত পরীমনিকে শান্ত করার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ। তার জবাবে নাসির মাহমুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ঢালিউড নায়িকা। উল্টো নাসিরকে বেরিয়ে যেতে বলেন তিনি। নতুন ওই ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যবেক্ষণ করছে।
ঢাকা বুট ক্লাবের দুটি ভিডিও প্রকাশের পর এবং অল ইউরোপিয়ান ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ আসার পর অনেকেই পরীমনির দিকে আঙুল তুলেছেন।
গত ৯ জুন মধ্যরাতে বোট ক্লাবের ঘটনার চার দিন পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও সংবাদ সম্মেলন করে পরীমনি ওই রাতের ঘটনার যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, এখন তার সেই বক্তব্যের সঙ্গে অনেক কিছুই মিল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টসূত্র।
মামলার এজাহারে পরীমনি অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনার দিন রাতে নাসির ও অমি মদ্যপান করার জন্য তাকে জোর করেন। মদ্যপান করতে না চাইলে নাসির জোর করে তার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন।
তবে নতুন প্রকাশ হওয়া ভিডিওতে সে রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে পরীমনি ধর্ষণচেষ্টার মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে তথ্য পাচ্ছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে পরীমনির ঘটনায় তার সহকর্মীরা প্রথম দিকে তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও পরে কিছুটা তার দায়ও দেখছেন। পরীর এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে অনেক শিল্পী-নির্মাতার মাঝেও। এমনকি দোষী সাব্যস্ত হলে চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকটি সংগঠনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হতে পারে এ নায়িকাকে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক কিছুই শুনছি। তবে এটা মনে রাখতে হবে পরীমনির মামলা তদন্তাধীন। আমরা বিচারের দিকে চেয়ে আছি। যদি পরী দোষী হন, তা হলে সাংগঠনিকভাবে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সেটি শিল্পী সমিতিকে সঙ্গে নিয়ে, যৌথভাবে।’
এ বিষয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর কয়েক দিন আগে স্পষ্ট করে বলেছিলেন, এত রাতে পরীমনির বোট ক্লাবে যাওয়া ঠিক হয়নি।
গত ১৩ জুন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন অভিনেত্রী পরীমনি। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে পর দিনই সাভার থানায় শুধু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন তিনি। ১৪ জুন উত্তরার একটি বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে মাদকসহ গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, বোট ক্লাবের ঘটনার আগে পরী তাদের ক্লাবে অসদাচরণ ও ভাঙচুর করেছেন। এর পর বনানী ক্লাবে এক তারকা দম্পতির অনুষ্ঠানেও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পরীর বিরুদ্ধে।
এর পর বেশ কয়েকটি ভিডিওতে পরীমনি বেপরোয়া জীবন উঠে আসে।
এসব বিষয়ে পরীমনি গণমাধ্যমকে বলেছেন- ‘কয়েক সেকেন্ডের বিভ্রান্তিকর অস্পষ্ট ক্লিপ নয়, আমি পুরো ভিডিওটি চাই। শুরু থেকেই বলে আসছি, ক্লাবের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার জন্য। যদিও কয়েক সেকেন্ড পাওয়া যায়, তা হলে নিশ্চয়ই পুরো ফুটেজই আছে। আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করে আবারও বলছি- দয়া করে পুরো ফুটেজ প্রকাশ করুন। সবাই সত্যটা জানুক কী ঘটেছে সেই রাতে।’
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।