০৫ জুলাই ২০২১, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
চিরাচরিত বিয়ের রীতি ভেঙে চুক্তিভিত্তিক নামমাত্র বিয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। শর্তহীন গোপন এই বিয়ে সৌদির সমাজে মিসইয়ার নামে পরিচিত। তবে এই বিয়ের সমালোচনা করছেন সৌদি আরবের ইসলামি চিন্তাবিদরা। তাদের অভিযোগ মিসইয়ারের মাধ্যমে আদতে উচ্ছৃঙ্খলতাকেই বৈধতা দান করা হচ্ছে।
মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী— বিয়ে ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক বৈধ নয়। তবে এই মিসইয়ারের আড়ালে সৌদির নাগরিকরা লিভ-ইনে মেতেছেন। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ গ্রুপ এবং ওয়েবসাইটও আছে।
প্রাথমিকভাবে সৌদি সুন্নিদের মধ্যে মিসইয়ার প্রচলন বেশি ছিল। মিসইয়ার অনুযায়ী, মুসলিম বিয়ের রীতি মেনে বিয়ে করা যায়। যে কোনও সময় একে অন্যকে ছেড়ে যেতে পারবেন। তবে এই পুরো বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সৌদি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বহুবিবাহে আগ্রহীদের জন্যই মিসইয়ার ব্যবস্থা মানানসই। নারীরাও এই ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক নানা জটিলতা থেকে দূরে থাকতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব বিয়ের মেয়াদ ১৪ থেকে ৬০ দিন হয়। যারা বিয়ের পর স্ত্রীর সম্পূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে রাখতে চান না, তারাই এ ধরনের বিয়েতে বেশি উৎসাহী।
বহুগামী নারী-পুরুষ দ্বিতীয় সংসারের ভার বহন করে বেড়ানোর চাপ এড়িয়ে এই ধরনের সম্পর্কের সুবিধা উপভোগ করে থাকেন। সৌদি আরবের সমাজে বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে এই বিয়ে বেশি জনপ্রিয়।
চুক্তিভিত্তিক নামমাত্র এই বিয়ের সম্পর্ককে হালাল বলে দাবি করেছেন সৌদি আরবের অনেক নাগরিক। দেশটির ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিজেও মিসইয়ার বন্ধনে আবদ্ধ জানিয়ে বলেন, রাজধানী রিয়াদের বাড়িতে তার একজন মিসইয়ার স্ত্রী রয়েছেন। এর পাশাপাশি সাধারণ বিয়েও করেছেন তিনি। সেই স্ত্রীর তিন সন্তান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার এক বন্ধুর এ ধরনের ১১ জন গোপন স্ত্রী রয়েছেন।
সৌদিতে বসাবসরত এক মিসরীয় বলেন, এই বিয়ে খুবই সস্তা। কোনো পণ লাগে না। কোনও বিধি-নিষেধ নেই। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর আমি আমার স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সী ছেলেকে কায়রোতে পাঠিয়েছি। এরপর আমি মিসইয়ারের সন্ধানে নামি। ইনস্টাগ্রামের ম্যাচমেকার খাতবার মাধ্যমে তিনি মিসইয়ারের সন্ধান করছেন। পছন্দের পাত্রী খুঁজে দেওয়ার জন্য খাতবাকে দিতে হবে ৫ হাজার সৌদি রিয়াল।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।