৬আগষ্ট ২০২১,বিন্দুবাংলা টিভি. কম,
অলিউল্লাহ রাজশাহী।।
নতুন বউ আনতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগনে মামুনের শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন মামা মাইদুল ইসলাম (৩৫)। সবাই মিলে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন। তবে সব আনন্দ মুহূর্তেই বিলীন হয়ে গেল বজ্রপাতে। মাইদুল হারালেন বাবা, মা, ভাইসহ নিজের পরিবারের সাতজনকে। বুধবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজনগর ডাইলপাড়া গ্রামে তার বাড়ির উঠানেই দেওয়া হয়েছে স্বজনদের কবর।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর দক্ষিণ পাঁকা ঘাটে বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব-আল-রাব্বী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বজ্রপাতে আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। আহতরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও এক শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বর মামুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নামোসূর্য নারায়ণপুর গ্রামের পাথুর ছেলে।
নিহত ১৭ জনের মধ্যে রয়েছেন মাইদুল ইসলামের বাবা মো. তোবজুল (৭০), মা জমিলা বেগম (৬০), ভাই মো. সাইদুল (৪০), ভাবি টকি বেগম (৩০), ভাতিজা মো. বাবু (১৫), বোন লেতুন বেগম (৪৫) ও ভাগনে মো. বাবলু (২২)।
রাতে মাইদুল ইসলাম বলেন, কতজন মারা গেছে জানি না। হালকা বৃষ্টির সময় মেয়েকে নিয়ে নৌকা থেকে নামছিলাম। নেমে ছাউনিতে যাওয়ার আগেই বজ্রপাত হয়। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে জানলাম আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
মুঠোফোনে নিহত সহবুলের ভাই রাকিব আলী বলেন, গত সোমবার সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাট গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে মো. মামুনের সঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের তেরোরশিয়া গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে সুমি খাতুনের বিয়ে হয়। আজ বর ও কনেকে আনতে পদ্মা নদী দিয়ে নৌকায় করে কনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন বর পক্ষের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে তারা পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা ঘাটে পৌঁছান। বৃষ্টির কারণে নৌকা থেকে নেমে ঘাটের পাশে ছাউনির নিচে আশ্রয় নিচ্ছিলেন তারা। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
মহারাজনগর ডাইলপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র সাকিব আলী মাইদুলের পরিবারের সদস্যদের জানাজায় অংশ নিয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, মাইদুলের ভাগনে মামুনের বিয়ে। তাই তাদের পরিবারের অনেকেই বর-কনেকে আনতে যাচ্ছিল। নিজে উপস্থিত থেকে পরিবারের ৭ জনকে মরতে দেখে নির্বাক মাইদুল। বাড়ির সামনেই একই সারিতে সবগুলো মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ২৫ হাজার করে টাকা সহায়তা করা হয়েছে।ত
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।