July 22, 2024, 1:09 pm
সর্বশেষ:
মেঘনায় কোটাসংস্কার আন্দোলন ও ছাত্রলীগের হামলা, ইন্দ্বন কি ? মেঘনায় কোটা আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা মেঘনায় প্রকল্পের প্রায় সাড়ে ৩০লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কর্মকর্তার ৫ বছরের কারাদণ্ড পার্বতীপুর যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোতে কর্মরত কয়েকজনকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ  চেয়ারম্যান বাড়ির ঘাটে দৃষ্টিনন্দন ঘাটলা মেঘনায় নদীর ভাঙন রোধে ফেলা হচ্ছে জিওবি ব্যাগ মেঘনায় নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে প্রশাসন, ক্ষতি গ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন স্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ডা. সাবরিনাসহ ৭ জনের নামে দুদকের মামলা কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর ৪ সপ্তাহের স্থিতাবস্থা

কার সঙ্গে সংলাপ, বিরোধী দলটা কে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ, বিরোধী দলটা কে? সংসদীয় রীতিতে সংসদের বিরোধী দল হলো প্রকৃত বিরোধী দল। এর বাইরেরগুলো দল হিসেবে গণ্য হয় না, আমেরিকায়ও হয় না। ট্রাম্পের দলকে তারা বিরোধী দল হিসেবে দেখে? যদিও আমরা তাদের সিস্টেমে না। আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার টাইপ ফলো করি। সেখানে ওইটিকে বিরোধী দল বলে।’

আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা বলেন, সংকট সমাধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান করেছেন। সংলাপ নিয়ে সরকার কী ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর উপলক্ষে সফর-পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিকেলে গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, এই যে মানুষগুলোকে হত্যা করা হলো, তাঁকে (পিটার হাস) প্রশ্ন (সাংবাদিকেরা) করা হলো না কেন? যখন উপনির্বাচনে ঘটনা ঘটেছিল, হিরো আলমকে কেউ মেরেছিল। তারা সে ঘটনায় বিচার দাবি করেছিল। এখন যখন পুলিশ হত্যা করল, এতগুলো সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, তখন তার বিচার দাবি করেনি কেন?

সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেভাবে পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল ওই খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ? কিসের আলোচনা? যারা উন্নয়ন ধ্বংস করতে পারে তাদের সঙ্গে ডায়ালগ? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়ালগ করুক। এটা আমাদের দেশ, স্বাধীনতা এনেছি রক্ত দিয়ে। এ কথাটা মনে থাকা উচিত। ওই খুনিদের সঙ্গে ডায়ালগ বাংলাদেশের মানুষও চাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশের মানুষ তাদের ঘৃণা করে। বিএনপি-জামায়াতকে ঘৃণা করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য। যেটুকু অর্জন করেছিল তারা সেটা আমরা সুযোগ করে দিয়েছিলাম, সেটা তারা হারিয়েছে।’

সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সংগঠন রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কাছ আপনারা কোনো সহানুভূতি পেয়েছেন? কোনো বিবৃতি পেয়েছেন? কেন পাননি? তাদের জিজ্ঞাসা করেন এখন তারা চুপ কেন? তারপর মানবাধিকার সংস্থা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তারা চুপ কেন? তাদের মানবিকবোধগুলো গেল কোথায়? তাদের কথা, বিবৃতি শুনি না কিসের জন্য, কী কারণে, রহস্যটা কী?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের যে সংগঠনগুলো যারা বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন, বুদ্ধির ভান্ডার খুলে ফেলেন, আজকে সে ভান্ডার বন্ধ কেন? তাঁরা চুপ কেন? তাঁরা কি বুদ্ধিহীন হয়ে গেছেন? সব বুদ্ধি কি চলে গেছে?’

বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন। তা সন্ত্রাসীদের কীভাবে শিক্ষা দিতে হবে সেই শিক্ষাটা আমাদের দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সেটাই আমরা দেব। এদের জন্য দেশটা ধ্বংস হোক—এটা সহ্য করা যাবে না।’

বিএনপি-জামায়াতের নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি–জামায়াত জোট সন্ত্রাসী এবং বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল সেটা আবারও প্রমাণ করল। কানাডার কোর্ট কিন্তু এ বিষয়টি কয়েকবার বলেছে। সন্ত্রাসী দল হিসেবে তাদের কর্মীদের আশ্রয় কানাডায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ববোধ নেই। তাদের সঙ্গে যতই ভালো ব্যবহার করি না কেন এদের স্বভাব বদলাবে না। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদে এরা বিশ্বাস করে। অবৈধ ক্ষমতাটাই এরা ভালো বোঝে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা নির্বাচন চায় না। এরা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। মানুষকে কষ্ট দেওয়াটাই এদের চরিত্র। এদের বিষয় বলার কিছু নেই। সবাই আমাদের প্রশংসা করে।’

২৮ অক্টোবর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা মাঝে কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছিল। সরকার তাতে বাধা দেয়নি। কিছু করেনি। শর্ত ছিল অগ্নিসংযোগ ভাঙচুর করবে না। তারা যখন সুষ্ঠুভাবে তখন ধীরে ধীরে মানুষের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে ঘটনা ঘটাল বিশেষ করে পুলিশকে যেভাবে হত্যা করছে। মাটিতে ফেলে যেভাবে কোপাল। সাংবাদিকদের ওপর হামলা। তাদের পেটাল। এই ঘটনার পর জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির আর কিছুই জুটবে না। তারা পুলিশকে তো মেরেছেই। তারপর হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা করেছে। ইসরায়েল প্যালেস্টাইনে যেভাবে হামলা করেছে। আমি তো এদের মধ্যে তফাৎ কিছু দেখতে পাচ্ছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নিজেরাই পালাল। পালিয়ে আবার অবরোধের ডাক। কিসের অবরোধ? কার জন্য অবরোধ। যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে সারা বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। তখন তাদের কাজটা হলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে দেখানো যে বাংলাদেশে কিছু হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামে যখন বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করছি তখন তারা ঢাকায় মানুষের ওপর হামলা করছে। পুলিশের ওপর হামলা করছে। মানুষ খুন করছে। তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আর সাংবাদিক। এদের ওপর কিন্তু হামলাটা চালাচ্ছে। যারা করছে তারা প্রকাশ্যে করছে। তাদের নাম-ধাম…। গাড়ি পোড়ানো। গতকালও লালমনিরহাটে আমাদের যুবলীগের একজনকে পুড়িয়েছে। এভাবে হত্যা করা, মানুষের সম্পদ নষ্ট করা আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এটাই তো তাদের চরিত্র।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর যারা যেভাবে চড়াও হলো। বুঝতে পারলাম না কেন হঠাৎ… কারণ সাংবাদিকেরা তো তাদের পক্ষে ভালো ভালো নিউজ দেয়। টক শোতে… বরং সবকিছুতেই সরকারের দোষটাই বেশি দেখে। তাহলে তাদের এত রাগটা কেন সাংবাদিকদের ওপর। সব জায়গায় তাদের নিউজ সবার আগে। আমার নিউজ সবার পরে। কোথাও কোথাও ৪ নম্বর ৫ নম্বরেও থাকে। কিন্তু তারাও যথেষ্ট ইয়ে পাচ্ছিল। তারপরও কেন তাদের রাগটা। সাংবাদিকদের চিকিৎসার বিষয়টি সরকার দেখবে।’

যাদের বাস পুড়েছে তাদের বিষয়ে সরকার দেখবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব গাড়ি পুড়িয়েছে। ২০১৩ সালে তারা একই রকম অগ্নি-সন্ত্রাস করে। পরে ২০১৪ ও ১৫ সালে একই রকম অবস্থা। তিনটি বছর ধরে তাদের অগ্নি-সন্ত্রাস আর আক্রমণ। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাসমালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। যাতে তারা ব্যবসাটা চালাতে পারে। আহত-নিহতদের আমরা সহায়তা দিয়েছি।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা