November 21, 2024, 10:20 am

চৌকিপুল থেকে অকেজো কালভার্ট

বিপ্লব সিকদার :

সময়ের বিবর্তনে সবকিছুই পরিবর্তন হয়েছে। জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে বর্ষাকাল হারিয়েছে যৌবন। আবার দেশের কোথাও কোথাও বন্যার কবলে ডুবে থাকতে হয়। বর্ষার স্বাভাবিক গতিবিধি এখন আর নেই। অঞ্চল বেধে পরিবর্তন ঘটেছে। তেমনি প্রয়োজনীয়তারও পরিবর্তন হয়েছে। যেমন পরিবর্তন হয়েছে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলাও। উপজেলার সেননগর বাজারের চৌকিপুলটির কথা বলব ।চৌকি পুলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খালের উপর তৈরি করা হয়েছিল। সেই খাল না থাকায় যা এখন অকেজো কালভার্টে পরিনত হয়েছে। সেটা কালভার্টের কোন দোষ নেই। কালভার্টটি এখনো সরকারের অর্থে পুনঃ মেরামত করে চাকচিক্য করে রাখা হয়েছে। যার প্রয়োজন নেই। নিম্নাঞ্চল খ্যাত এই অঞ্চলের মানুষের বসবাস ও জীবন যাত্রা ছিল চ্যালেঞ্জিং। পালতোলা নৌকা, মালবাহী নৌকা, পরবর্তীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকা বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। সেননগর বাজার টি ভৌগোলিক কারনে এতদঞ্চলের মানুষের কাছে গুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যা এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বর্ষা মৌসুমে উঁচু উচু সাধারণ নৌকা, ইঞ্জিন চালিত নৌকা বাজারের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত তৎকালীন একটি উচু চৌকিপুল ছিল যার নিচ দিয়ে ছোট , বড় নৌকা, পালতোলা নৌকা যাতায়াত করত। তখন উচু চৌকি পুলটির খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা ছিল। একটা সময় এসে চৌকিপুলটি জনাকীর্ণ হয়েযায় পাশাপাশি সড়ক পথে উন্নয়নের ছোয়া লাগতে শুরু করে। তৈরি করে করা হয় একটি কালভার্ট। তুলনামূলক বয়সও কম হয়নি। সড়ক সমান করে আধুনিক কালভার্টের এই খালে প্রয়োজন ছিল অনেক। পরবর্তীতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে হোক বা প্রকৃতির ভিন্ন কোন বি রুপ প্রভাবে হোক নিম্নাঞ্চল খ্যাত এই মেঘনা উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে এখন আর আগের মত পানি হয়না। সময়ের প্রয়োজনে জল পথে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্ব এখন স্থল পথের উপর ভর করেছে। অত্র অঞ্চলের বাসিন্দারা সড়ক পথেই চলাচল করে। পাকা সড়ক, কাচা সড়ক ব্যবহারের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। যেখানে বর্ষায় দশ হাত উচু পরিমাণ পানি হত সেখানে এখন দুই হাত পরিমাণ পানি হয় না। ফলে কৃষিসহ সবকিছুর একটা পরিবর্তন হয়েছে। যে বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম।সেই কালভার্টের উভয় পাশে জমির মালিকেরা বালু ভরাটের মাধামে ভিটে জমিতে পরিনত হয়েছে। ঐস্থানে এখন আর নেই কোন খাল,আসেনা পানি, আসেনা নৌকা। অপ্রয়োজনীয় একটি কালভার্টে পরিনত হয়েছে একসময়ের জনগুরুত্বপূর্ণ কালভার্টটি। এখন কালভার্ট মেরামত না করে সেটিকে নিলামে বিক্রি করে দিয়ে মাটি ভরাট করে সড়ক করে দিলে জনগণের এবং বাজারের অনেক উপকারে আসবে। তা না করে কালভার্টের মেরামত করতে সরকারি যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে কয়েক বছর যাবত সেটি অপচয় ছাড়া কিছুনা। দায়িত্বশীলদের অবশ্যই যেভাবে জনকল্যাণ ও সরকারি অর্থের সঠিক কাজে আসবে সে দিকে খেয়াল করা নৈতিক দায়িত্ব। সময়ের বিবর্তনে আজ চৌকি পুল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কালভার্টটিও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। উপযুক্ত সময় উপযুক্ত সিদ্ধান্তই দায়িত্বশীলতা। কর্তৃপক্ষ বিষয় টি ভেবে দেখলে স্থানীয় বাসিন্দা ও সরকারি অর্থের অপচয় রক্ষা পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা