এম এইচ বিপ্লব সিকদার,কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ফিরে :
বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এখন অনেক ভ্রমণ পিপাসু।দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে ভ্রমণ পিপাসু বাংলাদেশিরা। নিজ দেশের পর্যটন কেন্দ্র গুলোতেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো এখন পূর্বের তুলনায় ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। এর মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ করা পছন্দের তালিকায় প্রথম।
এখন আর মৌসুম ঘিরে বিচে যায়না পর্যটকরা, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও সমুদ্রের জলে গা ভেজাতে ছুটে চলে যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। পর্যটকদের মধ্যে অভিজাতদের পাশাপাশি সকল শ্রেণির পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় সমুদ্রের পাড়ে।উইকিপিডিয়ার তথ্যে পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। ১২০ কিঃমি: পুরো সমুদ্র সৈকতটি বালুকাময়, কাদা অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। বালিয়াড়ি সৈকত সংলগ্ন শামুক ঝিনুক নানা প্রজাতির প্রবাল সমৃদ্ধ বিপণি বিতান, অত্যাধুনিক হোটেল মোটেল কটেজ, নিত্য নব সাজে সজ্জিত বার্মিজ মার্কেট সমূহে পর্যটকদের বিচরণে কক্সবাজার শহর প্রায় সারা বছর প্রাণচাঞ্চল্য থাকে। শামুক-ঝিনুক ও প্রবালের দোকানের পাশাপাশি বার্মিজ পণ্যসামগ্রী, কস্মেটিক, ফাস্টফুড, কুলিং কর্ণার, শুটকি, স্টুডিও, মোবাইল সপসহ নানা দোকানের সমাহার রয়েছে এসব মাকের্টে। সুইজারল্যান্ডের “New Seven Wonderers Foundation” নামীয় বার্নাড ওয়েবার এর ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ২০০০ সালে ২য় বারের মত বিশ্বের প্রাকৃতিক নতুন সপ্তাশ্চার্য নির্বাচন প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি কয়েকবার শীর্ষ স্থানে ছিল। প্রাকৃতিক এ সমুদ্র সৈকত স্ব মহিমায় সমুজ্জ্বল রয়েছে।
কক্সবাজার রূপালী সমুদ্র সৈকতে বীচ বাইক, জেট স্কী, ঘোড়ার গাড়ি বা ঘোড়া পর্যটকদের জন্য আনন্দের খোরাক যোগায়। দেশী ও বিদেশি পর্যটকরা
সী-বীচের সাথে আলিঙ্গন করতে, স্নান করতে, এর সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে আর নির্ভেজাল নির্ঝঞ্জাট ও নিরাপদ পরিবেশে বিশুদ্ধ বাতাস খেতে। অপমান কিংবা অপদস্ত হতে নিশ্চয় কেউ বীচে গমন করে না। সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বীচ পুলিশ সংযোজন নিঃসন্দেহে সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ছলনাময়ী ও মায়াবী সমুদ্র সৈকতে স্নান করতে গিয়ে প্রতি বছর মৃত্যুর ঘটনা সত্যি বেদনাদায়ক। কক্সবাজার রূপালী সমুদ্র সৈকতে বীচ বাইক, জেট স্কী, ঘোড়ার গাড়ি বা ঘোড়া পর্যটকদের জন্য আনন্দের খোরাক যোগায়। এ আনন্দের খোরাক দেওয়া শ্রমিক ও হকারদের মধ্যে অধিকাংশই ‘শিশু ‘। যা আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।নিষিদ্ধ শিশু শ্রমিকদের পদচারণা সমুদ্র সৈকতে আসা দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে বড় অসংগতিপূর্ণ মনে হয় এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।অন্যদিকে ভিক্ষুকদের পদচারণাও রয়েছে অনেক। বিচের বাইরে হোটেল, মোটেলের পরিবেশ ও সেবা পূর্বের তুলনায় ভালো হলেও মাঝে মাঝে পর্যটকদের হয়রানির শিকার হতে হয়।বিশ্বের দরবারে মান ধরে রাখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে, কেনা কাটা থেকে শুরু করে চলাফেরায় স্বাধীন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সংগতিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এবং প্রতিটি পর্যটকের সঙ্গে ভালো আচরণ, কোন ভাবেই যেন প্রতারণার শিকার না হয় সে দিকে কর্তৃপক্ষকে আরও জোর দৃষ্টি দিতে হবে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ইতিবাচক সহ অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাবে। পর্যটকঘিরে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে পর্যটকদের আলিঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা খুবই জরুরি।
লেখক – সাংবাদিক।