আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার ১১ জন সদস্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে চুক্তিটি অনুমোদন করেছেন। ৩৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় এখন চুক্তিটি অনুমোদন করতে হবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। যুদ্ধবিরতির খবর প্রকাশের পর থেকে চালানো ইসরাইলি হামলায় শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা পর্যন্ত অন্তত ১১৩ জনের নিহতের খবর দিয়েছে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স।
গাজায় ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল আলজাজিরাকে জানান, নিহতদের মধ্যে ৩১ জন নারী ও ২৮ জন শিশু। ইসরাইলি হামলায় আরও ২৬৪ জন আহত হয়েছেন জানান তিনি। এর আগে বুধবার রাতে কাতারের দোহায় চলমান আলোচনা শেষে প্রাথমিক ধাপের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়। আগামী রোববার থেকে ৪২ দিনের জন্য এই যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে।
মাহমুদ বাসাল জানান, নিহতদের মধ্যে ৮৭ জনই উত্তর গাজার বাসিন্দা। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজায় আরও ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন খান ইউনুস ও দুজন রাফাহর বাসিন্দা। নিহত বাকি ১০ ব্যক্তি মধ্য গাজার বাসিন্দা।
পুরো ১৫ মাসের আগ্রাসনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী ৪৬ হাজার ৭৮৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আগ্রাসনের জেরে আরও ১১ হাজারের বেশি বাসিন্দা নিখোঁজ রয়েছেন।
১৫ মাসের আগ্রাসনে আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৪৫৩ জন।
আগ্রাসনের জেরে খাদ্যস্বল্পতা ও মানবিক সহায়তায় বাধার জেরে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে চলছে চরম খাদ্য সংকট। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের তথ্যানুসারে গাজায় ২২ লাখ মানুষ ‘চরম খাদ্যঝুঁকির’ মধ্যে রয়েছেন। অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ১৯ লাখ গাজাবাসী আগ্রাসনের জেরে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ইসরাইলের আইনসভা নেসেটে অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার অধিবেশনের কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়।
যুদ্ধবিরতির অনুমোদনের জন্য তেল আবিবে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ইসরাইলি জিম্মিদের স্বজনদের সংগঠন ইসরাইলি ক্যাপটিভস ফোরাম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার দীর্ঘ অবরোধ ভাঙতে ইসরাইলের মূল ভূখণ্ডে সম্মিলিতভাবে অভিযান চালায় হামাসসহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলো। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের অভিযানে অন্তত ১ হাজার ১৩৯ ইসরাইলি নাগরিক নিহত হন। অন্যদিকে গাজায় বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় ২৫১ ইসরাইলিকে। এর জেরে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসন শুরু হয়।