নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে এই অনুমতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে শুনানির জন্য চিন্ময়কে আদালতে হাজির করা হয়নি। নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারাবন্দী আসামিকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়।
আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, নগরীর কোতোয়ালি থানায় করা ভাঙচুরের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি চিন্ময়কে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ২২ জুনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুর, বিস্ফোরণ ও আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে ৩০ নভেম্বর মামলাটি করেন হামলায় নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ভাই খানে আলম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মোস্তফা কামাল সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে চিন্ময়কে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জুন আদালতে আবেদন করেন।
এর আগে গত মাসে আলিফ হত্যাসহ চারটি মামলায় চিন্ময়কে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছিল পুলিশ।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কে আটকের পর চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। মাঝে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এসব ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে আলিফ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩০ নভেম্বর ৩১ জনকে আসামি করে মামলা করেন। একই দিন নিহতের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা, ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আরেকটি মামলা করেন। এর আগে আদালতে পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যে বাধা দান ও ভাঙচুরের ঘটনায় কোতোয়ালি পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করে। এ ছাড়া সংঘর্ষের দিন হামলার শিকার মোহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি ৩ ডিসেম্বর জখম ও বিস্ফোরক আইনে আরও একটি মামলা করেন। তবে কোনো মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে চিন্ময়ের নাম নেই। পুলিশ বলছে, এসব মামলায় তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ হিসেবে চিন্ময়কে আসামি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দী অবস্থায় চলতি বছরের ৫ মে আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পর দিন ৬ মে পুলিশের তিন ও আলিফের ভাইয়ের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।