June 25, 2025, 7:33 pm

কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

 বিপ্লব সিকদার : 

সম্প্রতি রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিশোর গ্যাং-সংক্রান্ত সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে urbane ও উপ-শহর এলাকায় কিশোর গ্যাংদের তৎপরতা এখন আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তা একটি সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিচ্ছে। মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে খুনখারাবিতেও জড়িয়ে পড়ছে কিশোরেরা। এসব গ্যাং সদস্যদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে হলেও তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড পেশাদার অপরাধীদের মতোই সংঘবদ্ধ।

কিশোর গ্যাং তৈরির পেছনে একাধিক কারণ চিহ্নিত করা যায়—পারিবারিক অবহেলা, নৈতিক শিক্ষার অভাব, ইন্টারনেট-ভিত্তিক সহিংস কনটেন্ট, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির দুর্বলতা। অনেক সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থে এই কিশোর গ্যাংদের ব্যবহার করে থাকেন, যার ফলে তারা আইনের আওতার বাইরে থেকে যায়।

এই সমস্যা মোকাবেলায় সর্বপ্রথম প্রয়োজন পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সমন্বিত ভূমিকা। বাবা-মা এবং অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি—তাদের সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে, কী করছে তা নিয়মিত খোঁজ রাখা প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিশোরদের জন্য নৈতিক শিক্ষা, সহনশীলতা ও মানবিকতা বিষয়ক কর্মসূচি চালু করা দরকার। একইসাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ নিরাপদ ও সহনশীল রাখতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই আরও সক্রিয় হতে হবে। কিশোর অপরাধীদের চিহ্নিত করে শুধুমাত্র শাস্তি দেওয়া নয়, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারের তরফ থেকেও কিশোরদের জন্য খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সুযোগ বাড়াতে হবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এই সমস্যাকে তুচ্ছ করে দেখা যাবে না। এটি সমাজের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি। আজ যদি আমরা কিশোর গ্যাং রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেই, তাহলে আগামী প্রজন্মের নিরাপত্তা ও মূল্যবোধ দুটোই ঝুঁকির মুখে পড়বে।

লেখক – ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক,মাসিক বনফুল, বিন্দুবাংলা টিভি


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।


ফেসবুকে আমরা