মো. মাহমুদুল হাসান বিপ্লব সিকদার :
আমরা প্রায়ই বলি—দেশে দুর্নীতি বেড়েছে, প্রশাসন স্বেচ্ছাচারী হয়েছে, নেতা-নেত্রীরা জবাবদিহির বাইরে চলে গেছে। কিন্তু কখনো কি আমরা নিজেদের দিকে তাকাই? এই অবস্থার জন্য আমাদের, জনগণের, কোনো দায় নেই?
আমরা কি সত্যিই হিসাব চাই? আমরা কি প্রশ্ন করি, না কি চুপ থাকি? সুবিধাবাদ, ভয় আর উদাসীনতায় আমরা প্রায়ই মুখ বুজে নিই। ফলে যারা ক্ষমতায়, তারা বুঝে যায়—এই জনগণ জবাব চাইবে না, কিছু বলবে না। আর সেখান থেকেই শুরু হয় জবাবদিহির মৃত্যুকাল।
শুধু ভোট দিলেই গণতন্ত্র সম্পূর্ণ হয় না। ভোটের পরেও নাগরিকদের দায়িত্ব থাকে—সক্রিয় থাকা, মত দেওয়া, ভুল দেখলে তা চিহ্নিত করা, প্রতিবাদ জানানো। কিন্তু আমরা তা করি না। বরং প্রশ্ন তোলাকে ঝামেলা মনে করি। ফলে শাসকগোষ্ঠী ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যায় জবাব না দেওয়ার।
নেতা বদলায়, কিন্তু নীতির অবনতি রোধ হয় না—কারণ জনগণ চাপে ফেলে না। জনগণের ‘না বলা’ বা ‘না চাওয়ার’ এই সংস্কৃতিই আসলে স্বেচ্ছাচারকে প্রশ্রয় দেয়।
তাই বলা যায়, আজকে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতা, শাসনের দুর্বলতা ও সামাজিক অনিয়মের দায় এককভাবে শাসকের নয়। এই দায় আমাদেরও—আমরা যারা হিসাব চাই না, যারা চুপ থাকি, যারা ভাবি “আমার কিছু যায় আসে না।”
এখন সময় আয়নায় তাকানোর। সময় নিজেদের প্রশ্ন করার। কারণ হিসাব না চাওয়া জাতি কখনো হিসেবের বাইরে থাকতে পারে না।
লেখক -সাংবাদিক