নিজস্ব প্রতিবেদক, মেঘনা (কুমিল্লা):
মেঘনা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি বর্তমানে মানিকার চর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশের একটি ভাড়া ঘরে অস্থায়ীভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অফিসের বর্তমান অবস্থান ও পরিবেশ কার্যত এক গারদখানার মতো। জায়গার সংকুলান নেই, নেই বসার ব্যবস্থা কিংবা পর্যাপ্ত আলো-বাতাস। বিদ্যুৎ চলে গেলে দশ মিনিটের বেশি সময় সেখানে অবস্থান করাই কষ্টকর হয়ে পড়ে।
সেবা নিতে আসা অনেকে অভিযোগ করেন, জমি রেজিস্ট্রেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবার জন্য এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বিশেষ করে প্রবীণ ও অসুস্থ মানুষদের জন্য এটি ভয়াবহ কষ্টদায়ক। কেউ কেউ বলেন, এই দপ্তরে ঢুকলেই দম বন্ধ হয়ে আসে—দেয়ালে পাখা নেই, ছাদে সিলিং ফ্যানও অকার্যকর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অফিসটি স্থায়ীভাবে উপজেলা সদর
এলাকায় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হলেও মানিকার চর ইউনিয়নের একাংশ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। দলমত নির্বিশেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিল সহ বিক্ষোভ করেছে। তারা চায় দপ্তর টি মানিকার চর থাকুক। কারণ হিসেবে উঠে আসে, অফিস ঘিরে স্থানীয় কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তারা চান না, এটি অন্যত্র চলে যাক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের এক কর্মচারী বলেন, “গারদখানার মতো এই পরিবেশে কাজ করাটা কষ্টকর। তবে এর পেছনে অনেক হিসাব-নিকাশ আছে। অনেকে চান না, এখানে বেশি লোক সমাগম হোক। কারণ কমিশনের বিনিময়ে কাজ গোপনে সম্পন্ন করা সহজ হয়।”
অফিসে টয়লেট ব্যবস্থারও করুণ দশা। নেই আলাদা ওয়াশরুম, নেই পরিচ্ছন্নতা। নারী ও পুরুষ সেবাগ্রহীতারা বিপাকে পড়েন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, স্থানান্তর যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত মানিকার চর বাজার বা আশপাশের কোনো আধুনিক বাণিজ্যিক ভবনে অফিসটি স্থানান্তর করে একটি স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে সেবা নিশ্চিত করা হোক।
মেঘনার একজন প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে না গেলে বুঝা যায় না কেমন দুরবস্থা। এমন সেবা জনগণের জন্য অপমানজনক। আমরা চাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সেবা প্রত্যাশীরা।