বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে এক নতুন ধরণের ‘নিরব দুর্বৃত্তায়ন’ চলছে—যেখানে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন, শ্রম, ও সঞ্চয়ের প্রতীক ‘জমি’ হয়ে উঠছে এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালীদের টার্গেট। প্রভাব খাটিয়ে, দলীয় পরিচয়ে ছত্রছায়া নিয়ে কিংবা নকল দলিল-পর্চা দেখিয়ে দিনের পর দিন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের বসতভিটা, চাষের জমি কিংবা পৈত্রিক সম্পত্তি।
এই চক্র শুধু জমিই দখল করছে না—তারা গ্রামের শান্ত সমাজকে ভয়, অনিশ্চয়তা ও দুর্বিষহ এক ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা, আর প্রশাসনের নিরবতা কিংবা দুর্বলতা এই অন্যায়কে দিন দিন আরও পোক্ত করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশের নিষ্ক্রিয়তা, স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়া এবং প্রভাবশালীদের জোটবদ্ধ ভূমিকা এই অপরাধগুলোকে আরও শক্তিশালী করেছে।
প্রশ্ন হলো—এই দেশে একজন সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? কোথায় দাঁড়িয়ে নিজের অধিকার নিয়ে লড়বে?
গ্রামের নিপীড়িত মানুষের এই দীর্ঘশ্বাস, এই ক্ষোভ আর কষ্ট—এটা শুধু কোনো একটি অঞ্চলের নয়, এটা বাংলাদেশের হাজারো গ্রামের গল্প। এখন সময় এসেছে প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও সুশীল সমাজের একত্রে দাঁড়াবার। জমি দখল, প্রতারণা ও সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে অধিকার হরণকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
যদি আমরা আজ কঠোর না হই, যদি আমরা প্রতিরোধ না গড়ি—তবে আগামী দিনের গ্রাম হবে দুর্বৃত্তের উপনিবেশ, আর সুশাসনের স্বপ্ন হবে শুধুই কাগুজে প্রতিশ্রুতি।