• শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
সর্বশেষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আগমন ও ড. মোশাররফের বিএনপিতে আত্মপ্রকাশ মেঘনার ভাটের চর–বি আর টিসি মোড় সড়ক: বরাদ্দকৃত অর্থ পুকুরচুরি নয়তো? দিপুর শরীরের রক্ত ঝরেনি, যুবদলের রক্ত ঝরেছে মেঘনায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথি  থাকছেন ড. খন্দকার মারুফ হোসেন নির্বাচন কীভাবে হবে তা রাজনৈতিক নেতারা ঠিক করবেন: প্রধান উপদেষ্টা যুবসমাজকে খেলাধুলার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ রাখার আহ্বান ড. খন্দকার মারুফ হোসেনের বিগত বছরের তুলনায় মেঘনায় এইচএসসি ফলাফলে ইতিবাচক অগ্রগতি মেঘনায় অধরাই রয়ে গেল মাদকের সম্রাটরা এইচএসসির উদ্বেগজনক ফলাফলের জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের ব্যর্থ শিক্ষানীতিই দায়ী : ড.খন্দকার মারুফ হোসেন মেঘনায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

মেঘনার ভাটের চর–বি আর টিসি মোড় সড়ক: বরাদ্দকৃত অর্থ পুকুরচুরি নয়তো?

নিজস্ব সংবাদ দাতা / ৪১ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

বিপ্লব সিকদার।।

মেঘনা উপজেলার ভাটের চর (লুটের চর) থেকে বি আর টিসি মোড় পর্যন্ত মাত্র ৭.৫০ কিলোমিটার সড়ক—এই সড়কটি ঘিরে জনদুর্ভোগ আজ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার বিপুল বরাদ্দে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হলেও সড়কটি এখনও খানাখন্দে ভরা, চলাচল অনিরাপদ, এবং বাস্তবে ৫৫ শতাংশ কাজও পূর্ণ হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এলজিইডি দপ্তর বলছে ৫৫ শতাংশ কাজ হয়েছে, কিন্তু পথচারীরা বলছে—এটি কাগুজে অগ্রগতি, মাঠের বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন।

প্রশ্ন উঠছে—অর্থ বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যয় হলো কোথায়?
এ প্রকল্পে দরপত্র পাওয়া দুই প্রতিষ্ঠানই সাবেক এলজিইডি মন্ত্রী কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠজন—এ তথ্য স্থানীয়দের মধ্যে স্বার্থসংঘাত, প্রভাব খাটানো ও অসাধু তদবিরের অভিযোগকে আরও জোরালো করে তুলছে।

মূল সংকট শুরু হয় কাজ শুরুর আগেই।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, মূল ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা থাকায় তিনি যথাসময়ে কাজ ধরতে পারেননি। এরপর ৫ আগস্টের পর কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে ‘প্রতিনিধি ঠিকাদার’ নিয়োগের নামে গোপনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। প্রতিনিধিরা কার্যত কমিশনভিত্তিক কাজ ভাগ করে নেওয়ায় নির্মাণ মানে অব্যবস্থাপনা, তড়িঘড়ি ও ঢিলেঢালা কাজ প্রথা তৈরি হয়। যার সরাসরি খেসারত দিতে হচ্ছে জনসাধারণকে—প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে মরনফাঁদে পরিণত সড়কটি দিয়ে।

এর মাঝেই আবার নতুন করে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
প্রশ্ন জাগে—যখন প্রথম থেকেই প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তখন আবার নতুন প্রস্তাব কেন?
জনগণের ভোগান্তিকে কি পুঁজি করে আরও অর্থ হাতানোর নতুন কৌশল শুরু হলো?
এটাই কি রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের আরেকটি ‘নিয়মিত চিত্র’?

যদি ৭.৫০ কিমি রাস্তার জন্য ১৫ কোটি টাকাও যথেষ্ট না হয়, তাহলে প্রথমেই সেই হিসাব-নিকাশ ভুল ছিল, অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বরাদ্দে গরমিল রাখা হয়েছিল। আর যদি বরাদ্দ যথেষ্ট হয়—তাহলে কাজ সম্পন্ন না হওয়ার দায় কার? ঠিকাদার? নাকি দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা? নাকি উভয়ের যৌথ লুটতরাজ?

আজ মেঘনার মানুষ ক্লান্ত, ক্ষুব্ধ, ও দিশেহারা।
মানববন্ধন, প্রতিবাদ—এই সাধারণ মানুষের আর্তনাদ একটি কথা খুব স্পষ্টভাবে বলে দেয়:
এই সড়কের কাজে ভয়াবহ অনিয়ম আছে, এবং এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের সময় এখনই।

জনগণের করের টাকায় পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প যদি জনগণের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে—তাহলে সেটি উন্নয়ন নয়, এটি দুর্নীতি।

আমাদের দাবি সরল—
১. প্রকল্পের ব্যয়, দরপত্র, কাজের গতি ও মান সবকিছুর স্বচ্ছ তদন্ত হোক।
২. যারা কাজ বিলম্বিত করেছে বা জনগণের টাকায় হস্তক্ষেপ করেছে—তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক।
৩. অতিরিক্ত বরাদ্দের নামে লুটপাটের খেলা বন্ধ হোক।
৪. দ্রুততম সময়ে মানসম্মত কাজ শেষ করে সড়কটি জনগণের জন্য নিরাপদ করে দেওয়া হোক।

রাষ্ট্রীয় অর্থ জনগণের।
জনগণের ভোগান্তির বিনিময়ে কেউ যেন ব্যক্তিগত রাস্তা বানাতে না পারে এখনই সেই দায় রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।

এই জাতীয় আরো খবর দেখুন