• রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
সর্বশেষ
গ্রামীণ জনপদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সুবিধা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সিলেটে দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত ক্ষমতা বা আসন ভাগাভাগির ভিত্তিতে সমঝোতায় যাবে না এনসিপি : নাহিদ ইসলাম নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা খারাপ হওয়ার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজনীতিতে বন্ধুত্ব ও শত্রুত্বের চলমান লাবণ্য মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া টেকসই জাতি গঠন সম্ভব নয় সৌজন্য সাক্ষাতে তৃণমূলে উচ্ছ্বাস, বার্তা—‘ত্যাগীরা সামনে এলে ধানের শীষ জিতবে’ “কিশোর গ্যাং নয়—গ্যাং”; রাজনৈতিক কর্মীর ছদ্মবেশে অপরাধকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ হোক এখনই মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী ও তৌহিদী জনতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় আহত ৪

গ্রামীণ জনপদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সুবিধা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে

বিপ্লব সিকদার / ২০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

 

গ্রামীণ জনপদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রাম পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রশাসনের প্রথম সারির সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তন, জনগণের নিরাপত্তা–চাহিদা বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ অপরাধের নতুন ধরন—সব মিলিয়ে এই বাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন—গ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে গ্রাম পুলিশের জবাবদিহি, দক্ষতা ও আধুনিকতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।

গ্রামে খুন, ধর্ষণ, চুরি, জমি দখল, উত্তেজনাপূর্ণ পারিবারিক বিরোধ—এসব ঘটনার প্রথম খবর সাধারণত গ্রাম পুলিশের কাছেই পৌঁছায়। তারা মাঠপর্যায়ের চোখ–কান—কিন্তু সেই ‘চোখ–কান’ কতটা সক্রিয়, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেক জায়গায় গ্রাম পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত উপস্থিতির অভাব, দায়িত্বে গাফিলতি, রাজনৈতিক প্রভাব বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে পক্ষপাত—এসব কারণে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা কমছে। ফলে ছোট অপরাধ বড় ঘটনায় রূপ নিচ্ছে, আর প্রশাসন অনেক সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দেরিতে।

জেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়হীনতাও গ্রাম পুলিশের কার্যক্রমকে দুর্বল করছে। কোথাও তাঁরা শুধু কাগজপত্র বহনের কাজে সীমাবদ্ধ, কোথাও আবার মাঠপর্যায়ের ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেও যথাযথ স্বীকৃতি পান না। পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের ঘাটতি—সব মিলিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী ধীরে ধীরে অনাদরে পিছিয়ে পড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে তিনটি বিষয়ের ওপর জরুরি গুরুত্ব দিতে হবে—
(১) জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ,
(২) আধুনিক প্রশিক্ষণ,
(৩) প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি।

গ্রাম পুলিশের দৈনন্দিন কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য ডিজিটাল লগবুক, জিপিএস-ভিত্তিক মাঠপরিদর্শন রিপোর্টিং কিংবা নিয়মিত মূল্যায়ন ব্যবস্থা থাকলে তাদের দায়িত্ব পালনের মান অনেক বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে এই বাহিনীকে তদারকি করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকলে গ্রাম পুলিশ সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।

নিরাপত্তাহীনতা গ্রামীণ অর্থনীতি, শিক্ষা, নারী–শিশুর জীবনযাত্রা—সব কিছুকে প্রভাবিত করে। তাই গ্রাম পুলিশকে শুধু একটি সহায়ক বাহিনী হিসেবে নয়, বরং গ্রামীণ নিরাপত্তার মূল স্তম্ভ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি জবাবদিহি কাঠামো আরও শক্তিশালী করা হলে গ্রামাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

গ্রামের মানুষ নিরাপদ হলে দেশের উন্নয়নও আরও টেকসই হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।

এই জাতীয় আরো খবর দেখুন