সিলেটে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত ১৯১তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। “দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’’ স্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সেবার মান উন্নয়ন, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি রোধ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধই ছিল এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। বক্তব্যে তিনি আগস্টের পর দেশের বড় ধরনের পরিবর্তন ও জনআকাঙ্ক্ষার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “জাতির এই প্রত্যাশার সঙ্গে নিজেদের মিলিয়ে নিতে না পারলে তা হবে জাতির সঙ্গে প্রতারণা। আপনারা এই প্রতারণায় অংশ নেবেন না।” তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, “অন্য যে কোন কমিশনের চাইতে দুদক আলাদা। কমিশনের ভেতরে যেখানেই দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গেছে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অনুসন্ধান ও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
গণশুনানিতে আরও বক্তব্য দেন দুদক সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম, বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী, ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মু. মাসুদ রানা ও পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার আলম। গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানির শিকার বা সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ তাদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদের উপস্থিতিতে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়।
এদিন দুদকের তফসিলভুক্ত মোট ৭৩টি অভিযোগের শুনানি হয়। এর মধ্যে ৩টি অভিযোগ অনুসন্ধানে নেয়া হয় এবং ২৮টি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। বাকি অভিযোগগুলো প্রতিবেদন সাপেক্ষে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গণশুনানির উদ্দেশ্য ছিল সরকারি সেবা নিশ্চিতকরণ, দায়িত্বশীলতা, সততা ও জবাবদিহিতা বাড়িয়ে দুর্নীতি নির্মূলে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা। গণশুনানিকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী মাইকিং, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ, বুথ স্থাপন, অভিযোগ বাক্স স্থাপনসহ বিভিন্ন প্রচারণা চালায় দুদক। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়।
গণশুনানিতে সেবা দাতা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন পেশার নাগরিক, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।