মেঘনা উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা একটি কার্যকর, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন। সুশাসন শুধু একটি প্রশাসনিক শব্দ নয়—এটি নাগরিকের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, উন্নয়ন ও মানবিক মর্যাদার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মেঘনার সাধারণ মানুষের কাছে সুশাসনের অর্থ হলো—আইনের শাসন নিশ্চিত করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।
প্রথমত, আইনের শাসন ও নিরপেক্ষতা। মেঘনায় অপরাধ দমন, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সংঘটিত অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃঢ় ভূমিকা জনগণের প্রধান দাবি। আইনের প্রয়োগে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পরিচয় নয়, অপরাধই যেন মুখ্য হয়—এমন বার্তা প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। ভূমি অফিস, থানা, উপজেলা কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেবাপ্রাপ্তিতে হয়রানি ও দালালনির্ভরতা কমাতে ডিজিটাল সেবা, নিয়মিত অডিট ও অভিযোগ নিষ্পত্তির কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি। জনগণের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি হলে প্রশাসনের প্রতি আস্থা বাড়বে।
তৃতীয়ত, সেবা-কেন্দ্রিক প্রশাসন। জন্মনিবন্ধন, এনআইডি, ভূমি নামজারি, সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা—এসব ক্ষেত্রে সময়মতো ও হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করাই সুশাসনের বাস্তব রূপ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নারী ও প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ নজর প্রয়োজন।
চতুর্থত, আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা। বাজার, গণপরিবহন স্ট্যান্ড ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নিয়মিত টহল এবং কমিউনিটি পুলিশিং জোরদার করলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে। ভয়মুক্ত পরিবেশই উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
পঞ্চমত, জনসম্পৃক্ততা ও তথ্যপ্রবাহ। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। উন্মুক্ত শুনানি ও তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন সুশাসনকে শক্তিশালী করবে।
লেখক – সাংবাদিক।