কুমিল্লায় আন্তঃজেলা সক্রিয় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সর্দার মো. সাদ্দাম হোসেনসহ সাতজন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন পিকআপ গাড়ি, দেশীয় অস্ত্র ও বিভিন্ন ডাকাতি সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়—কুমিল্লার দাউদকান্দি থানা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি বিশেষ টিম তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় ডাকাত চক্রটির গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, একটি পিকআপ গাড়িতে করে ১৪ থেকে ১৫ জনের একটি ডাকাত দল দাউদকান্দি মডেল থানাধীন ইলিয়টগঞ্জ বাজার এলাকায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। পরে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ১টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে লক্ষ্মীপুরগামী সড়কের মুখে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পুলিশ।
ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পালানোর চেষ্টা করলে নীল-হলুদ রঙের একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বরবিহীন পিকআপসহ গাড়িতে থাকা সাতজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। তবে অন্ধকারের সুযোগে আরও সাত থেকে আটজন ডাকাত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত চক্রের সর্দার মো. সাদ্দাম হোসেনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বসতঘরের দরজার পাশে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা একটি দেশীয় তৈরি এলজি (অস্ত্র) ও দুই রাউন্ড বার বোর কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় দাউদকান্দি মডেল থানায় দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা নং-২৯, তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, দণ্ডবিধির ৩৯৯ ও ৪০২ ধারায় এবং মামলা নং-৩০, একই তারিখে অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ও ১৯(এফ) ধারায় দায়ের করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মো. সাদ্দাম হোসেন (৩২), মো. সুমন (৩০), মো. দুলাল মিয়া (২৮), মো. সোলেমান রুবেল (৩৫), ফকির আহমেদ আলাউদ্দিন (৫৫), মামুনুর রশিদ সোহাগ (৩৫) ও মো. শাহীন (২৫)। তারা কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ভোলাসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র আইনের মামলা রয়েছে। শুধু সাদ্দামের বিরুদ্ধেই ফেনী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও পাঁচ থেকে আটটি পর্যন্ত মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
ডিবি পুলিশ আরও জানায়, পলাতক ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।