১৬ আগষ্ট ২০২০, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা :
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৭ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আজ রোববার গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, গত ২৬ জুলাই গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রস্থাগারের পেছনের দিকের জানালা ভেঙ্গে ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরের কাছে রাখা হয়। পরে একটি ট্রাকে করে সেগুলো ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। এ গুলো যুবলীগ নেতা পলাশ শরীফের মালিকানাধীন ঢাকার মাহাখালীর ক্রিস্টাল ইন হোটেল রাখা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূর উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে গত ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে গোপালগঞ্জ ও ঢাকার বানানী থানা পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৩৪ টি কম্পিউটার উদ্ধার করে ও ২ জনকে গ্রেফতার করে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত মাঠ পর্যায়ের ৭ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল শনিবার তারা গোপালগঞ্জে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাসের আদালতে স্বীকারোক্তি স্বাীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা এ ঘটনার বর্ননা দিয়েছে। এছাড়া কম্পিউটার চুরির মাস্টার মাইন্ড যুবলীগ নেতা পলাশ শরীফ সহ আরো অনেকের নাম বলেছে। তদন্তের স্বার্থে অন্যদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছেনা। তাবে তাদের গ্রেফতার করতে পারলে ২৬ জুলাইয়ের কম্পিউটার চুরি সহ ২০১৮ ও ২০১৭ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিটার চুরির ঘটনা উদঘাটিত হবে। এ চক্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কম্পিউটার চুরির সাথে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। দোষীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় বিশ্বিবিদ্যালয়ের কেউ জড়িত আছে কিনা তা ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, গ্রেফতার ৭ জনের মধ্যে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার ইন্দ্রাকচর গ্রামের মৃত সেলিম মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৪৫) ও ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার চোরখাই গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৪) চোরাই ৩৪টি কম্পিউটাসহ ঢাকার ক্রিস্টাল ইন হোটেল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের অন্য সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষের ছাত্র ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর গ্রামের বিল্লাল শরীফের ছেলে মাসরুল ইসলাম পনি শরীফ (২৩), একই উপজেলার বরফা শেখপাড়ার আবুল হোসেন শেখের ছেলে আ. রহমান সৌরভ শেখ (১৯), বরফা মধ্যপাড়ার আইয়ুব শেখের ছেলে হাসিবুর রহমান ওরফে শান্ত ওরফে কাকন (১৯), বরফা গ্রামের কামাল পাশা মিনার ছেলে নাইম উদ্দিন (১৯), ও মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বিশমপুরদী গ্রামের সালাম হাওলাদার ছেলে নাজমুল হাসানকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. প্রফেসর নূরউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একই সঙ্গে ১৯ জন নিরাপত্তা প্রহরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ দফায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৪৬টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এর মধ্যে ঈদের ছুটিতে ৪৯ টি, ২০১৮ সালে ৪৭ টি ও ২০১৭ সালে ৫০টি কম্পিউটার চুরি হয়।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।