২৬ জুলাই ২০১৯, বিন্দুবাংলা টিভি. কম,
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ২নং নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে ভিজিএফ’রব চাল আত্মসাতের আনিত অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল কাহিরের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম সরেজমিন অভিযোগটি তদন্ত করেন। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান ও উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ইয়াছমিন বেগম। ভিজিডির চাল আত্মসাতের আনিত অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান উদ্দিন আহমদকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য গত ২১ এপ্রিল জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের চাইরগঁাও গ্রামের মৃত কছদ্দর আলীর পুত্র হাসান আলী, মৃত মখবুল হোসেনের পুত্র আব্দুর রশিদ, দৌলতপুর গ্রামের জমির হোসেনের পুত্র সাব্বির আহমদ, খালপাড় গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর পুত্র ওমর আলী ও মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র গোলাম রসুল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় স্থানীয় সরকার শাখার এক আদেশে গত ১৪ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সরজমিনে তদন্ত করেন তদন্ত টিম। কিন্তু তদন্তকালে দরখাস্তকারী ৫ জনের মধ্যে কেউই উপস্থিত হয়নি। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পান তদন্ত কর্মকর্তারা। তদন্তকালে ভিজিএফ’র চাল বিতরণীর মাষ্টাররুল, চাল উত্তোলনের চালানকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করা হয়। পাশাপাশি চাল আত্মসাতের বিষয়ে এলাকার লোকজন ও পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণের সাথে আলোচনা করেন তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা। এ সময় বাদীপক্ষের কেউই উপস্থিত না থাকায় বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে উঠায় চেয়ারম্যান কর্তৃক চাল আত্মসাতের বিষয়টি একেবারে অবান্তর ও বানোয়াট বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত লোকজন। তারা জানান, দরখাস্তকারীদের অনেকেই ভূয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এদের মধ্যে দৌলতপুর গ্রামের সাব্বির আহমদ নামে কোন ব্যক্তি নেই বলে ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল আমিন লিখিতভাবে তদন্ত টিমকে জানান। এ ছাড়া বর্ণিত ২নং বাদী (দরখাস্তকারী) চাইরগাঁও গ্রামের মখবুল আলীর পুত্র আব্দুর রশিদ দীর্ঘ একযুগ ধরে ছাতকের সেওতের পাড়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বলে তারই ঘনিষ্ঠজনরা তদন্ত টিমকে জানান। এ সময় উপস্থিত সর্বস্তরের জনতা বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ একজন সাদা মনের মানুষ। জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিবার্চিত হওয়ার একযুগ পূর্ব থেকেই এলাকাজুড়ে তিনি একজন নিবেদিত সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত। তাই নিবার্চিত হওয়ার পর থেকে এ যাবত ইউনিয়নব্যাপি ব্যাপক উন্নয়নে ঈষার্ন্বিত হয়ে অব্যাহত উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে তার নিবার্চনী প্রতিপক্ষের লোকজনই আজ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরসহ নানা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। সমাজের এসব কুচক্রি মহলকে আমরা ধিক্কার জানাই। আমরা সমাজের সচেতন মহল তাদেরকে প্রতিহত করতে তাদের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল কাহির জানান, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ সময় নরসিংপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রসার সুপার মাওলানা সাদিকুর রহমান, সহসুপার মাওলানা মতুর্জ আলী, বিশিষ্ট মুরব্বি হাজী ইছাক মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মনোয়ার আলী মনর, সাবেক মেম্বার মফিজুর রহমান বতন, সিদ্দেক আলী, মাস্টার আছকির আলী, আব্দুল করিম, এম আব্দুল্লাহ, নূর আলী ইমরান, নুর মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালিক, আব্দুল হক, সিদ্দেক আলী, আবুল মুনসুর, ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান, ফজলুর রহমান, আমির হোসেন, নূরুল আমিন, আলী হোসেন, আব্দুল হেকিম, জয়নাল আবেদীন, আমির হোসেন, আশিকুর রহমান, সদস্যা জোছনা বেগম, জোৎস্না বেগমসহ এলাকার শতাধিক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।