এম. আবদুল্লাহ, মহাসচিব, বিএফইউজে ঃ
ষোড়শ বর্ষে পদার্পণ করেছে দৈনিক নয়া দিগন্ত। আজ ব্যাপক আয়োজনে দিনটি উদযাপন করবে পত্রিকাটি। ২০০৪ সালের এদিনে বাংলাদেশের সংবাদপত্র জগতে নতুন বার্তা-নতুন এক শ্লোগান নিয়ে নয়া দিগন্ত তার যাত্রা শুরু করেছিল। ১৫টি বছরই নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে উজানে সাঁতার কাটতে হয়েছে পত্রিকাটিকে।
এই শুভ দিনে নয়া দিগন্ত পরিবারের প্রতিটি সদস্য, পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষী, শুভানুধ্যায়ি সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
‘সত্যের সঙ্গে প্রতিদিন’ এই শ্লোগান নিয়ে নয়া দিগন্তের আত্মপ্রকাশ ঘটে । জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি আদর্শের পত্রিকা হিসেবে পরিচিতি থাকলেও সত্যনিষ্ঠ ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পাদকীয় নীতির কারণে সবমতের পাঠকেরা পত্রিকাটি হাতে তুলে নেন এবং নিয়মিত চোখ বুলান।
একটি সংবাদপত্রের জন্য ষোল বছর একেবারে কম সময় নয়। যে কোন দেশে যে কোন সমাজেই সংবাদপত্রের প্রকাশনা বেশ কঠিন ও দুরূহ একটি কাজ। দু:সাহসীও বটে। বাংলাদেশেতো তা আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের। নয়া দিগন্ত প্রকাশনার শুরু থেকেই দেশ জাতি রাষ্ট্র ও সীমানার অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে আসছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের ভূখন্ড প্রহরার অবিনাসী চেতনাকে প্রেরণার উৎস হিসেবে গ্রহণের কথা বলেছে পত্রিকাটি। দেশের স্বার্থকে উচ্চকিত করতে সত্যের সঙ্গে প্রতিদিন থাকার প্রত্যয় মুলমন্ত্র হিসাবে নিয়েছে তারা । এদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত শুরু থেকে অবিচল থাকার চেষ্টা করেছে । অতি অল্প সময়ে বিপুল পাঠক প্রিয়তাও পেয়েছে । নয়া দিগন্ত পাঠকের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করতে পেরেছে। বলা যায়, পাঠকই পত্রিকাটির প্রাণ। সে কারণেই সময়ে সময়ে ভয়াবহ ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও টিকে আছে সমহিমায়।
পেশাদারিত্ব, বস্তুনিষ্ঠতা, সত্যবাদিতা- এসব বৈশিষ্ট্যই একটি সংবাদপত্রের টিকে থাকার রক্ষাকবচ। পাঠক একটি সংবাদপত্রকে নির্ভীক দেখতে চান। সংবাদপত্র যেমন জনমানসে প্রভাবকের ভূমিকা রাখে ঠিক তেমনি পাঠকও সংবাদপত্রের চরিত্র দেখে তা পড়ার জন্য বেছে নেন। আধুনিক সমাজের ভেতর থেকেই এই পরিবর্তন ঘটে চলেছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় নির্ভিক ও নিরাপস সাংবাদিকতা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
নয়া দিগন্ত প্রকাশনার বিগত ১৫টি বছর পত্রিকাটির জন্য মসৃণ কিংবা কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না। এক কঠিন বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যেই নয়া দিগন্তকে পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। বৈরি একটি স্রোত অতিক্রম করে এই টিকে থাকাটা সত্যিকার অর্থেই সংগ্রামমুখর। তবুও নয়া দিগন্ত এগিয়ে চলেছে। এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
বিশ্বব্যাপী মুদ্রিত সংবাদপত্রের পাঠক সংখ্যা কমছে। ইন্টারনেটের বিস্ময়কর অগ্রযাত্রার ঢেউ সংবাদপত্রেও লেগেছে। হাতের মুঠোয় সংবাদপত্র পড়া কিংবা লাইভ খবর সম্প্রচারের তোড়ে মুদ্রিত সংবাদপত্র পিছিয়ে পড়ছে। পত্রিকাগুলোকেও এখন তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে সেসবের সাথে। প্রযুক্তির প্রসার সংবাদপত্রকে বর্ণিল ও সুসজ্জিত যেমন করেছে ঠিক তেমনি এর ব্যয়ও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। নয়া দিগন্তকেও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।