December 2, 2024, 4:23 am
সর্বশেষ:
মেঘনা নদীতে চাঁদাবাজির সময় গ্রেপ্তার ৩ রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই, সূচনা করি নতুন অধ্যায়ের: তারেক রহমান মেঘনা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ নির্বাচনের রোডম্যাপ দিলে জনগণ আশ্বস্ত হবে: খন্দকার মোশাররফ কমিটি গঠন নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষ ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজকে স্নাতক পাস কোর্সে সাময়িক অধিভুক্তের ঘোষণা  মাছের প্রজননে বাধা দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে: মৎস্য উপদেষ্টা বাধার মুখে বন্ধ হলো নারায়ণগঞ্জের ‘সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ ডেঙ্গুতে আরো ১০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৬ ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার

বেপরোয়া শিক্ষার্থী, অসহায় শিক্ষক

৩০’জুন ২০২২ ইং, বিন্দুবাংলা টিভি. কম, নিজস্ব প্রতিবেদক

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

 

সাভারে শিক্ষক হত্যার বিচার ও নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা
সাভারে শিক্ষক হত্যার বিচার ও নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে অনশন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
নীরবে বেশ বড়সড় বদল ঘটে চলেছে পরিবারে, সমাজে। কোমলমতি বলে সমাজে চিরকাল প্রশ্রয় পাওয়া শিক্ষার্থীদের একটি অংশ হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। শিক্ষকের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলাই যেখানে বেয়াদবি বলে বিবেচিত হতো এই সমাজে, সেখানে হরহামেশা অনেক শিক্ষক হচ্ছেন লাঞ্ছিত নিজেরই ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা। ছাত্রের অসত্য অভিযোগে মুন্সিগঞ্জের স্কুলশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে জেলে নেওয়ার ঘটনা ঘটল এই সেদিন। এটাই প্রথম ঘটনা ছিল না শিক্ষক হেনস্তার। শেষ ঘটনাও নয়। ঘটনা ঘটেই চলেছে, বিদ্যালয় থেকে শুরু করে মহাবিদ্যালয়, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও।

ঘটনা আজকাল আর বেয়াদবি কিংবা হেনস্তায় সীমিত থাকছে না। এমনকি ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে নিজ ছাত্রের বেপরোয়া হামলায় গুরুতর আহত হন ঢাকার আশুলিয়ার শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। হয়তো জেলে গিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন হৃদয় মণ্ডল। ছাড়া পেয়ে ক্ষমা করে দিতে পেরেছেন নিজের ছাত্রদের। কিন্তু সে সুযোগ মেলেনি উৎপল সরকারের। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান তিনি।

শিক্ষক উৎপলের হত্যাকারী গ্রেপ্তার
উৎপল সরকার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গতকাল বুধবার গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বাবা মোহাম্মদ উজ্জ্বলকেও গ্রেপ্তার করা হয় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে, কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তাঁর ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, সহায়তা করেছেন পালাতে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত শনিবার ছাত্রীদের ইভ টিজিংয়ের অভিযোগে জিতুকে সতর্ক করায় ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল সরকারকে গুরুতরভাবে আহত করেন জিতু। গত সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষক মারা যান।

নড়াইলের ঘটনায় দুঃখিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এদিকে নড়াইলে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় শিউরে উঠেছে মানুষ। একটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে পুলিশের উপস্থিতিতে জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছে তাঁরই প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এ সময় সামনে না থাকলেও ক্যাম্পাসেই উপস্থিত ছিলেন।

নড়াইলে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘নড়াইলের ঘটনায় আমরা সত্যিই দুঃখিত। উত্তেজিত জনতা শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছে। আমাদের ডিসি ও এসপি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছিল।’

রাজশাহীতে প্রবীণ অধ্যাপক আক্রান্ত
এত আলোচনা-সমালোচনার পরেও শিক্ষক লাঞ্ছনা থেমে নেই। এবারের ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল শ্রেণিকক্ষের দরজায় আইন বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দীকার গতিরোধ করেন একই বিভাগের ছাত্র আশিক উল্লাহ। তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং হত্যার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ আছে। আশিক বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আশিককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গতকাল চতুর্থ বর্ষের ক্লাস চলাকালে ইমপ্রুভমেন্টের কথা বলে ক্লাসে ঢোকেন আশিক। তবে তাঁর কোনো ইমপ্রুভমেন্ট ছিল না। ক্লাসের শেষের দিকে তিনি ওই অধ্যাপককে বিব্রত করার জন্য অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি ক্লাস থেকে বের হতে গেলে আশিক উল্লাহ দরজা লাগিয়ে তাঁকে মারতে উদ্যত হন। অন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে সরিয়ে নেন। তাঁরা অভিযুক্তকে আটক করে বিভাগের সভাপতির কক্ষে দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অধ্যাপক বলেন, তিনি চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শেষ করে বের হতে গেলে ওই ছাত্র পথরোধ করেন। বিভাগের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়ে সে সমাধান চাইলে তিনি তাঁকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু সে তা না শুনেই অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। আশিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা এবং শ্রেণিকক্ষে মেয়েদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ দেখায়।

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভাগের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য করুন


ফেসবুকে আমরা