৭ আগষ্ট ২০২২,বিন্দুবাংলা টিভি ডটকম,
মোশাররফ হোসেন ভুইয়া।।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মুন্সিগঞ্জ শাখা ১১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দল পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। খোদ কমিটির পদদারীদের অনেকেই অভিযোগ করেন এই দুই নেতার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নতুন কমিটি অনুমোদনের পর গত ২৮ জুলাই পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় কমিটির পদদারী অনেকেই আমন্ত্রণপত্র পায়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটিতে থাকা তাদের ঘনিষ্ট কয়েকজন ও বহিরাগতদের নিয়েই পরিচিতি সভা করেছে।
এ বিষয়ে নতুন কমিটির সহ সভাপতি জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন কমিটি ঘোষণা হওয়ার তিন মাসের মাথায় পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পরিচিতি সভায় কমিটির সবাইকে আমন্ত্রণপত্র দেওয়ার কথা থাকলে তা দেওয়া হয়নি। আমার মোবাইল নম্বরও দায়িত্বশীল সবার কাছে আছে। আমি শ্রীনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলাম। তবুও আমি আমন্ত্রণ পাইনি। কমিটির সবাইকে না জানিয়ে এবং বহিরাগতদের নিয়ে একটা পরিচিত সভা করবে এটা এক ধরণের স্বেচ্ছাচারিতা। এতে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।
মুন্সিগঞ্জ মহিলা দলের আরেক সহ সভাপতি নাছিমা আক্তার সীমা বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণার তিন মাসের মধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন সভাপতি-সেক্রেটারি। একটা পরিচিতি সভায় কমিটির সবাইকে অবগত করা দরকার ছিল। কিন্তু সভাপতি-সেক্রেটারি তা করেননি। তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। ইতিমধ্যে তারা এর প্রমাণ দিয়েছেন। তারা কোনভাবেই যোগ্য ও দক্ষ সংগঠক না। তাদেরকে দিয়ে দল পরিচালনা করা যাবেনা। এতে করে সংগঠন নিষ্ক্রিয় হবে।
এদিকে নতুন কমিটির দপ্তর সম্পাদক শিউলি আক্তার শিমুর অভিযোগ, সংগঠনের সভাপতি ও সেক্রেটারির পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হল দপ্তর সম্পাদক। এই দায়িত্বে থাকার পরও পরিচিতি সভার বিষয়ে তারা আমাকে জানায়নি। নতুন কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া সেলিনা আক্তার বিনাকে আমি চিনিনা। এর আগে কখনও দেখিনি। রাজনৈতিক কোন সভা সমাবেশেও তাকে কখনও দেখা যায়নি। তবুও তিনি কিভাবে এত বড় একটা রাজনৈতিক দলের সভাপতি হলেন তা বোধগম্য নয়। শিউলি আক্তার শিমু আরও বলেন, সভাপতির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ আছে যা প্রকাশ্যে বলা সমিচিন হবে না। তবে সভাপতি পদ দেওয়ার আগে তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার ছিল।
একই অভিযোগ করেন, মহিলা দলের নতুন কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাছরিন সুলতানা মনি। তিনি বলেন একটা সংগঠন পরিচালনা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কিন্তু নতুন কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারি কিভাবে পরিচালনা করবে তারাও ভালভাবে বুঝে কিনা সন্দেহ আছে। তবে পরিচিতি সভা করতে হলে কমিটির সবাইকে জানানো উচিত ছিল।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিউটি আক্তার তিশা বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণার পর পরিচিতি সভা করা হয়েছে। সভায় বিভিন্ন ইউনিট থেকে কর্মী এনেছি। এছাড়া এই কমিটির সবার মোবাইল নম্বর জানা না থাকায় তাদের অবগত করতে পারিনি। তিনি বলেন, আমি আগের কমিটির প্রথম যুগ্ন সম্পাদক ছিলাম। এই কমিটিতে আমি সাধারণ সম্পাদক হতে চাইনি। তবুও আমাকে পদ দেওয়া হয়েছে। এরপরও সংগঠনকে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ মহিলা দলের ঘোষিত কমিটির সভাপতি সেলিনা আক্তার বলেন, কমিটির দুইজন ব্যতীত সবাইকে পরিচিতি সভার বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। এখন কেউ যদি আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও না আসে সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমি আশা করছি পরবর্তী প্রোগ্রামগুলোতে সবাই উপাস্থিত থাকবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবো।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।