বিপ্লব সিকদার।।
প্রথমেই যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পর শুরু হয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দুটি নির্বাচনের কোনটিতে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে ক্ষমতাশীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, জয় পরাজয় নিয়ে দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, গ্রুপ, উপ গ্রুপ তৈরি হয়। এমনকি দলের মধ্যে সাংগঠনিক স্থবিরতাও দেখা যাচ্ছে। এর প্রভাবে সমাজের সকল সেক্টরে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিষয় টি অনুধাবন করতে পেরে সম্প্রতি দফায় দফায় বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুতি সভা করছেন বর্ধিত সভা সফল করার জন্য। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী খুব ঢাকঢোল পিটিয়ে এই সভাটি করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সভায় জেলার নেতৃবৃন্দকে দাওয়াত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও পরবর্তীতে সে সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসেছে দলটি একাধিক সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মুল ঘটনায় আসি, এই উপজেলায় দুটি কলেজ আছে একটি মানিকার চর বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। অন্যটি মুজাফফর আলী স্কুল এন্ড কলেজ। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দুই কলেজের তেমন শিক্ষার্থী বুধবারের আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বলে মনে হয় না। যারা আন্দোলন করতে এসেছেন সবাই মেঘনার সন্তান। অধিকাংশই রাজধানীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন চলছে। প্রশ্ন জাগে এই কোটা সংস্কার আন্দোলন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান ছেড়ে কেন নিজ এলাকায় আন্দোলন করার স্থান বেছে নিলেন? নাকি ছাত্রদের ব্রেন ওয়াস করে কোন ইন্দ্বনদাতারা মেঘনার স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ভিন্ন কোন ফায়দা হাসিল করতে চাইছেন? মঙ্গলবার যখন ফেসবুকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন করা হবে মেঘনায় ফেসবুকে এমন ঘোষণা করা হয়েছে সাথে সাথে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠন এ ঘোষণা দেওয়া দোষের কিছু না কারণ কেন্দ্রীয় ভাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলকে ঈঙ্গিত করে যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি, জামাতের ইন্দ্বন রয়েছে, যদি কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয় নেতাকর্মীরা যেন প্রতিহত করে।সারাদেশ যখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঠিক তখন দুটি গ্রুপের আন্দোলন উপজেলা পর্যায়ে হবে এটা সাধারণ দৃষ্টিতেই লাগার কথা যে সংঘর্ষ হবে। স্থানীয় সাংবাদিকরা পুলিশ প্রশাসনকে এই সংঘাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন। কথামতো উভয় দল পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে মাঠে নেমেছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অংশ গ্রহণ করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা শাহরিয়ার ইমাম যার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের কান্ডারী। অন্যদিকে গুরতর আহত নাজিমুজ্জামানও আওয়ামী পরিবারের সন্তান। এতে দোষের কিছু নেই কারন তারা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে কোটা সংস্কারের আন্দোলন করবেন। প্রশ্ন হলো ছাত্রলীগ যখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে ফেসবুক লাইভে বলতে শোনা গেছে ছাত্রদল, শিবিরের ক্যাডারেরা ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পানিতে পড়ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদল, শিবিরের কর্মী ছিলো কিনা? তা জানা সম্ভব হয়নি তবে থাকতেও পারে। যেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান দুই দফা উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে যার যার ভাবে ফিরে যেতে বলে তখন সবাই ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। একদল সাধারণ শিক্ষার্থী খাবার হোটেলে প্রবেশ করার পর মানিকার চর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল বাতেনসহ সঙীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নাজিমুজ্জামান এর পরিচয় জানার পরেও এভাবে মেরে জখম করা কি প্রশ্নের জাগেনা যে তাকে পরিকল্পিত ভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাক দিয়ে পেটানো হয়েছে? ছাত্রদল, শিবিরকেতো পেটানো হয়নি? বুধবার প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষনে বলেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলন কারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রশাসন সহযোগিতা করেছে। মেঘনার প্রশাসন কি এতটা অসহায় ছিল যে পূর্ব ঘোষিত দুটি দলের আন্দোলনের এই হামলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার? আগামী বর্ধিত সভায় এর পপ্রভাব পরবে কি?নাকি ভিন্ন কিছু বার্তা জানান দেওয়ার জন্য এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পরিকল্পিত ভাবে কোন মহলের ইন্দ্বনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে? রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল সংস্থা এই উপজেলার মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খতিয়ে দেখা সহ অপরাধীদের তদন্ত স্বাপেক্ষে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি নয়কি? লেখক – সাংবাদিক