April 15, 2025, 11:29 am

বিদায় ১৪৩১, স্বাগত ১৪৩২ : আজ পহেলা বৈশাখ

বিপ্লব সিকদার :

গতকালের সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটি বছরের ইতি হলো।সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা।যে যেখানে এবং যেভাবেই থাকি  সময় তার নিজস্ব গতিতে চলতে থাকবে। এরই ধারাবাহিকতায় সময়ের চাকা ঘুরে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বছর। নতুন সূর্য উদিত হয়ে জানিয়ে দিল—বিদায় ১৪৩১, স্বাগত ১৪৩২। আজ পয়লা বৈশাখ, নববর্ষের প্রথম দিন। বৈশাখ বাঙালির জীবনে শুধু নতুন বছরের শুরুই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি নব সূচনা। প্রতিটি মুহূর্তে আনন্দ, বেদনার সংমিশ্রণে চলছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে চলছে আমাদের জীবন ও জীবীকা । সব ভেদাভেদকে ভুলে গিয়ে পুরনো কে বিদায় দিয়ে নবচেতনায় আবাহন করে করে বাঙালি।”মাছে ভাতে বাঙালি “পান্তা, কাচা মরিচ, শুটকি ভর্তা দিয়ে বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য পোশাক পরে দলবেঁধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে খাওয়ার মধ্যে দিয়ে বাঙালির অস্তিত্ব খুঁজে পাই।  যে বাঙ্গালির সংস্কৃতি এখনো বিদ্যমান বাংলার কৃষাণ -,কৃষাণীর পরিবারে। পহেলা বৈশাখ গ্রাম থেকে শুরু করে শহর ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যেখানে বাঙালির অস্তিত্ব আছে সেখানেই দিবস টি উপলক্ষে উৎসবে মেতে উঠবে। এবছর বিগত বছরের গুলোর মতই সরকারি ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনলেও বার্তা প্রায় একই।  বেধাবেদ ভুলে নতুন করে প্রান সঞ্চার হোক প্রতিটি বাঙালির জীবনে। গ্রামীণ সমাজ থেকে শুরু হলেও দিনে দিনে বৈশাখ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে নগরে, এমনকি বিদেশবিভুঁইয়ে। বাঙালির অস্তিত্ব যেখানে, সেখানেই নতুন বছরে বৈশাখ উদ্‌যাপিত হয়। এ যেন বাঙালির অস্তিত্বের পরিচয়। বর্ষবরণের এ স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণসঞ্চার করে প্রত্যেকের জীবনে।যারা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সাথে পরিচিত দিবসটির অঞ্চল বেধে  আঞ্চলিক নাম রয়েছে। ছোট বেলা ‘গাছতলা ‘নামে মেলা হতো মাসজুড়ে। মেলাকে কেন্দ্র করে দোকানীরা নানারকমের ব্যবহৃত হাতে তৈরি মালামাল পসরা সাজিয়ে রাখতো। পেপু, বাসের বাশি শব্দে মুখরিত থাকতো মাসজুড়ে প্রতিটি শিশুর হাতে।  নানা খেলনা ক্রয় করে বাড়িতে ফিরে আসতো। শৈশবের অতৃপ্ত আনন্দ এখন আর আগের মত পালন হয়না। সবকিছুতে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে, বাঙ্গালিয়ানা পরিচয়েও আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে। মাসব্যাপী মেলা এখন আর হয় না। ডাক ডোল পিটিয়ে নানাহ কর্মসূচির মধ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, একদিনেই শেষ হয়ে যাবে পহেলা বৈশাখ! সম্প্রীতি বজায় রাখা, শৃঙ্খলা বজায় রাখা, লাখো মানুষের ভীড় যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় বাঙালির প্রাণের উৎসব বর্ষ বরন ” আনন্দ শোভাযাত্রা ” পালন করতে। প্রতিটি ঘরে উৎসবের আমেজ পৌঁছে দিতে রাজনৈতিক দল গুলো বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সর্ব পরি বাঙ্গালির স্বকীয়তা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে, প্রতিটি কর্মসূচিতে, বাঙালি ও বাংলাদেশী সংস্কৃতির চর্চার বিস্তার ঘটুক সেই মানুষিকতা প্রতিটি মানুষের উপলব্ধি হোক, বাঙালি সংস্কৃতি হোক আমাদের বিশ্বব্যাপী পরিচয়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে বেচে থাকুক বাঙ্গালির স্বকীয়তা।

লেখক – সাংবাদিক


আপনার মতামত লিখুন :

মন্তব্য বন্ধ আছে।


ফেসবুকে আমরা