বিপ্লব সিকদার :
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নেতৃত্বর গুণ, দূরদর্শিতা ও জনআস্থা—এই তিনটি গুণ যাঁদের মাঝে একত্রে বিদ্যমান, তারেক রহমান তাঁদের অন্যতম। শুধু একজন রাজনৈতিক নেতাই নয়, বরং তিনি এক সম্ভাবনার নাম, এক দূরদর্শী চিন্তার ধারক এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাণ্ডারী। তাঁর প্রতিটি বক্তব্যে, প্রতিটি নীতিনির্ধারণে ফুটে ওঠে—একটি গণতান্ত্রিক, আত্মনির্ভরশীল এবং সুশাসনভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর স্বপ্ন।
–রজনৈতিক অভিষেক থেকে আজ–
২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর তারেক রহমান দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। অনেকেই তখন একে “রাজনৈতিক উত্তরাধিকার” ভাবলেও সময়ের ব্যবধানে তিনি নিজের চিন্তা, কর্মদক্ষতা ও সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে দলকে আধুনিকীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
বিএনপির ‘বুয়েট গ্র্যাজুয়েট’ বা শহরকেন্দ্রিক নেতৃত্ব যখন তৃণমূলে দুর্বল হয়ে পড়ছিল, তখন তারেক রহমান তৃণমূলের ভিত শক্ত করার কৌশল হাতে নেন। দেশজ রাজনৈতিক বাস্তবতায়, তিনিই ছিলেন প্রথম নেতা যিনি ‘ভিশন ২০৩০’-এর মতো পরিকল্পনা তুলে ধরেন—যেখানে কর্মসংস্থান, তথ্যপ্রযুক্তি, সুশাসন ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির প্রতিফলন দেখা যায়। তারেক রহমান বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে অবিস্মরণীয় নেতা হিসেবে কর্মী ও বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের মন জয় করেছেন।
তারেক রহমান: চিন্তার নেতৃত্ব
তারেক রহমান রাজনীতিকে দেখেন বিশ্লেষণ ও গঠনমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে। গণতন্ত্রের পক্ষে বারবার উচ্চকণ্ঠ হওয়া, দলীয় কর্মকাঠামোকে বিকেন্দ্রীকরণ করা, নতুন প্রজন্মকে গুরুত্ব দেওয়া—এই নীতিগুলো তাঁর নেতৃত্বকে অনন্য করে তোলে।
তিনি বিশ্বাস করেন—
ক্ষমতা নয়, জনগণই রাজনীতির মূল ভিত্তি
প্রতিবন্ধকতা নয়, উদ্ভাবনই হবে অগ্রগতির চাবিকাঠি
রাজনীতি হতে হবে নৈতিকতা ও গণঅংশগ্রহণের উপর ভিত্তি করে
নতুন প্রজন্ম ও তারেক রহমান
বর্তমান বাংলাদেশে রাজনীতিবিমুখ এক তরুণ সমাজ গড়ে উঠছে। তাদের অনেকেই হতাশ, কেউ কেউ বিদ্রোহী। এই তরুণদের মাঝে আবারও স্বপ্ন ফেরাতে হলে প্রয়োজন এমন একজন নেতার, যিনি আধুনিক চিন্তা, প্রযুক্তি-সচেতনতা ও দেশপ্রেমে বিশ্বাস করেন। তারেক রহমান এই জায়গাতেই এগিয়ে—তিনি একদিকে যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল, অন্যদিকে তিনি আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য রেখেই রাজনৈতিক রূপরেখা সাজাতে চান।
নির্যাতন ও আত্মত্যাগ
বহুবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হামলা-হয়রানি চালানো হয়েছে। কিন্তু কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথানত না করে, যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেও বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর চিন্তা, দিকনির্দেশনা এবং ভার্চুয়াল নেতৃত্ব অব্যাহত রেখেছেন।
তারেক রহমান নিছক একজন নির্বাসিত নেতা নন, তিনি জুলুমের মুখে মাথা নত না করা সাহসী নেতৃত্বের প্রতীক।
ভবিষ্যতের বাংলাদেশে তাঁর ভূমিকা
বাংলাদেশ আজ এক নতুন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। যেখানে মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়, রাজনীতিতে নীতি আর ন্যায়ের ঘাটতি—সেখানে তারেক রহমান শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বরং একটি গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী এবং নাগরিক-অধিকারভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের আলোকচ্ছটা। শেষ কথা নতুন প্রজন্মের কাছে রাজনীতির অর্থ যদি হয় ন্যায্যতা, উদ্ভাবন, রাষ্ট্রগঠন ও গণতন্ত্র—তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে তারা একদিন নতুনভাবে আবিষ্কার করবে।
তিনি ফিরে আসবেন—স্বপ্ন নিয়ে, সাহস নিয়ে এবং নতুন বাংলাদেশের পথে এক নব সূর্যোদয়ের বার্তা নিয়ে।
লেখক – রাজনীতিক,রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গণমাধ্যমকর্মী।